বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধুর ছবি পোড়ানোর আসামি আওয়ামী লীগে

  •    
  • ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ১৪:১৭

এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি পোড়ানো মামলার আসামি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের এক ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

সম্প্রতি খটশিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ কর্মীসভায় দলটিতে নাম লেখান হাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান।

সিদ্দিকুরসহ তার অনুসারীদের আওয়ামী লীগে যোগদানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়নাল আবেদিনকে হারিয়ে হাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান হন বিএনপি থেকে জাতীয় পার্টিতে আসা সিদ্দিকুর।

নির্বাচনী নীতিমালা তোয়াক্কা না করে ওই বছরের ২৬ এপ্রিল এলাকায় ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ঘোড়ারগাড়িতে চড়ে বিজয় মিছিল করেন তিনি।

মিছিলটি নির্বাচনী এলাকার সিংগারোল-দহগা নামক স্থানে পাকাসড়কে পৌঁছালে সেখানে নির্মিত নৌকা প্রতীকের তোরণ ভাংচুর করা হয়। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত গেটটিতে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলটির নেতা জয়নাল আবেদিনের বাড়িতেও মারপিট, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

ঘটনার পরদিন ২৭ এপ্রিল জয়নালের ভাই জালাল উদ্দীন বাদী হয়ে সিদ্দিকুর রহমানসহ ১০৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনের বিরুদ্ধে পীরগঞ্জ থানায় দ্রুতবিচার আইনে মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুরসহ ১১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৬ সালের আগস্টের শেষ সপ্তাহে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে যান সিদ্দিকুর, বহাল হন স্বপদে। শুনানি শেষে মামলাটি বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠায় হাইকোর্ট।

নিম্ন আদালতে মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এ অবস্থায় হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ করেন সিদ্দিকুর। এতে নিম্ন আদালতে আবারও থেমে যায় মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম। বর্তমানে বিষয়টি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে অনুসারীদের নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন সিদ্দিকুর। অনেকের ধারণা মামলা থেকে বাঁচতেই এই পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আকতারুল ইসলাম।

তিনি জানান, সিদ্দিকুর বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেখানে স্বার্থ হাসিল না হওয়ায় জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন।

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি পুড়িয়ে দেয়া মামলার প্রধান আসামি হয়েও কিভাবে সিদ্দিকুর আওয়ামী লীগে যোগদান করলেন; কোন স্বার্থে তাকে আওয়ামী লীগে যোগদান করানো হল তা বুঝে উঠতে পারছেন না আকতারুল।

তার অভিযোগ, বিশেষ সুবিধা নিয়ে সিদ্দিকুরকে মামলা থেকে বাঁচাতেই তাকে আওয়ামী লীগে যোগদান করানো হয়েছে।

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইমদাদুল হক বলেন, কোনো বিশেষ সুবিধা নয়, কেউ আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে যোগদান করতেই পারে; এতে দোষের কিছু নেই।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘মামলা থেকে বাঁচতে নয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়েই আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। বঙ্গবন্ধু বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর বা পোড়ানোর ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক এমপি হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১২ সালে বিএনপি নেতা সিদ্দিকুর রহমান স্বার্থ হাসিলের জন্য জাতীয় পার্টিতে এসেছিলেন। ঠিক একইভাবে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য আবারও আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন।

তিনি আরও বলেন, সিদ্দিকুর নিজেই নির্বাচনী প্রতিহিংসা সৃষ্টি করে জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি চালিয়ে মামলায় পড়েছেন। তবে তার জাতীয় পার্টি ছেড়ে যাওয়ায় দলের কোনো ক্ষতি হবে না।

এ বিভাগের আরো খবর