দুই দিনের ব্যাবধানে রাজধানীর তিনটি বস্তিতে আগুনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ২৭ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর পল্লবীর কালশী এলাকার বাউনিয়া বাঁধ বস্তি, মহাখালীর সাততলা বস্তি ও মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে বিহারি পট্টিতে আগুনের ঘটনা রহস্যজনক।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এতে দলের কেন্দ্রীয় দফতরের চলতি দায়িত্বে থাকা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সই রয়েছে।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মঙ্গল ও বুধবারের এই রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে রাজধানীর ওই তিনটি বস্তির অসংখ্য নিম্ম আয়ের মানুষ ঘরবাড়ি, সম্পদ, অর্থ, পরার কাপড় এমনকি রান্না করার সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা। এ পরিস্থিতিতে তারা শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, বস্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্টরা ষড়যন্ত্র করে এসব আগুন লাগিয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের ধারণা। আগুন লাগিয়ে দখল-পাল্টা দখল, অসৎ প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া, অবাধে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির ক্ষেত্রে তারা বেপরোয়া।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে-বিগত তিন বছরে ঢাকায় বিভিন্ন বস্তিতে ৯৫৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ পর্যন্ত একটিরও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি। ক্ষমতাসীনদের মদদপুষ্ট ভূমিদস্যুদের যোগসাজশ ও অবৈধ প্রভাব এর মূল কারণ।
রাজধানীর বস্তিতে বিভিন্ন সময় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে একদিকে ভূমিদস্যুরা প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক বনে যাচ্ছেন। অন্যদিকে নিম্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ অগ্নিকাণ্ডের কারণে এক বস্তি থেকে অন্য বস্তিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন একটু মাথা গোজার ঠাঁইয়ের জন্য। এ সত্ত্বেও সরকার, প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়গুলোর প্রতি ন্যূনতম ভ্রুক্ষেপ করছে না।
সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা (সংসদ সদস্য) উন্নয়নের জোয়ারের কথা বলতে বলতে হয়রান হয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে প্রকৃত অর্থে কী উন্নয়ন হচ্ছে তা এসব বস্তি ও বস্তিবাসীর দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড, পাল্টাপাল্টি দখল ও দখলের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। তিনি অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপনকারী নিম্ম আয়ের মানুষদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ ও নতুন করে জীবন শুরু করতে আর্থিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
পাশাপাশি বস্তিতে সেবা সংস্থাগুলোর বৈধ ও সুরক্ষিত সেবা নিশ্চিত, মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের অপসারণ ও নিরাপদ জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।