বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাকা চৌধুরীর ‘বিলিয়ন ডলার’ ফেরানোর উদ্যোগ

  •    
  • ২৬ নভেম্বর, ২০২০ ১৯:৩৪

বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তাদের মধ্যে ধনকুবের দুই জন। একজন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আরেকজন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। দুদকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, এই অর্থ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর।

সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশির বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। অর্থের পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বলে জানতে পেরেছে সংস্থাটি। এই টাকা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগও নিয়েছে সরকার।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সম্প্রতি একটি টকশোতে জানান, বিপুল এই টাকা মৃত্যুদণ্ড হওয়া এক আসামির। তবে তার নাম প্রকাশ করেননি।

বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তাদের মধ্যে ধনকুবের দুই জন। একজন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আরেকজন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী।

দুদকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, এই অর্থ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর।

জানতে চাইলে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আমি ব্যক্তির নাম ও টাকার অংক বলতে পারব না। তবে বিপুল পরিমাণ এটা বলা যায়।’

অংকটা এক বিলিয়ন ডলার কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অংকটি বলায় আইনি ঝামেলা আছে। আন্তর্জাতিক একটি সংগঠন তদন্ত করছে। তাদের তদন্ত শেষ না হওয়ার আগে টাকার অংক এবং নাম বলার সুযোগ নেই।’

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান

 

টাকার অংক এক বিলিয়ন ডলার বলে যে প্রচার আছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আরও বেশিও হতে পারে।’

তাহলে কি আমরা বলব, এক বিলিয়ন ডলারের বেশি?- প্রশ্ন করলে খুরশীদ আলমের জবাব, ‘বলতে পারেন।’

বর্তমান মুদ্রা হারে এক বিলিয়ন ডলারে হয় বাংলাদেশি সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার মতো।

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থপাচার নিয়ে গত কয়েক দশক ধরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, কানাডায় ২৮ জনের অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছেন তারা। তবে তারা কারা, সে নাম প্রকাশ করেননি মন্ত্রী। হাইকোর্ট অবশ্য তাদের নাম জানতে চেয়েছে সরকার ও দুদকের কাছে।

এর মধ্যে সিঙ্গাপুরে অর্থ পাওয়ার বিস্ফোরক তথ্যটি পাওয়া গেল।

 

খুরশীদ আলম নিউজবাংলাকে জানান, এই অর্থ ফেরত আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আর টাকা ফেরত আনতে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘বিদেশে অনেক টাকা পাচার হয়েছে, এটা এখন দিবারাত্রির মতো সত্য। কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার হয়েছে। এই টাকা আনার জন্য মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল এসিসটেন্সের আওতায় দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, ফিনাশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কাজ করছে।

‘এই টাকা আনার সময়ের ব্যাপার, আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপার। জাতির স্বার্থে এই টাকা ফেরত আনা হবে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। কিছুটা সময় হয়ত লাগবে।’

এই অর্থ বৈধ পথে যায়নি এটা স্পষ্ট। কারণ, বিদেশে ব্যবসা বা অন্য কোনো কারণে টাকা পাঠাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন লাগে। সিঙ্গাপুরে এই বিপুল পরিমাণ টাকা পাঠানোর অনুমোদন কোনো একক ব্যক্তিকে কখনও দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তাই ধারণা করা হচ্ছে, এটা পাচারের টাকা।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন

 

খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন, টাকার যিনি প্রকৃত মালিক  তিনি ফাঁসিতে ঝোলার পর স্ত্রী সন্তানেরা মালিকানা দাবি করেননি। বাংলাদেশ টাকাটার মালিকানা দাবি করেছে। এখন আইনি লড়াই হবে।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘দেশের টাকা যদি অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়, অবশ্যই সেটা ফেরত আনতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। একই সঙ্গে এই টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এখনই কিছু প্রকাশ করতে রাজি নন। এক প্রশ্নে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনাকে এ মুহূর্তে ফাইনাল কিছু বলতে পারব না। আপনি এ বিষয়ে দুদকের মানিলন্ডারিং ইউনিটের ডিজির সঙ্গে কথা বলুন।’

দুদকের মানিলন্ডারিং বিভাগের প্রধান এ এন এম আল ফিরোজ বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো তথ্য নিয়ে কাজ করছি। তবে রোববারের আগে এ বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলতে পারব না।’

পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার উদাহরণ বাংলাদেশে খুব একটা নেই। কেবল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা ৩৪ কোটি ১০ লাখ টাকা ফিরিয়ে আনা হয়েছে তিন দফায়। সেটি ২০১২ ও ২০১৩ সালের কথা।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অর্থপাচারবিরোধী সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) জানিয়েছিল, গত সাত বছরে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ হাজার ২৭০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে, যা স্থানীয় মুদ্রায় সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোনো অর্থ ফিরিয়ে আনা যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর