বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই ডলারের কমে পৌনে সাত কোটি টিকা দেবে গ্যাভি

  •    
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ২০:৪৩

প্রাণঘাতী ও সংক্রামক ব্যাধি থেকে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের জীবনরক্ষায় টিকা প্রদানে ভূমিকা রেখে আসছে গ্যাভি। বিশ্বের নিম্ন ও মধ্য আয়ের ৯২টি দেশকে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা সরবরাহ করবে তারা।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশকে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেবে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস-গ্যাভি নামে একটি জোট।

করোনা ও সমসাময়িক বিষয় বুধবার এক মতবিনিময়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মা, শিশু ও কৈশোর স্বাস্থ্য কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর শামসুল হক এই তথ্য জানান।

অধিদফতরে এই সভার আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য বাংলাদেশ ছয় কোটি ৮০ লাখ টিকা পাবে গ্যাভির কাছ থেকে। তবে গ্যাভি এটা বিনামূল্যে দেবে না। এর জন্য কো ফিন্যান্সিং এ যেতে হবে সরকারকে। আর প্রতিটি টিকার দাম পড়বে এক দশমিক ছয় থেকে দুই ডলারের মধ্যে।

প্রাণঘাতী ও সংক্রামক ব্যাধি থেকে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের জীবনরক্ষায় টিকা প্রদানে ভূমিকা রেখে আসছে গ্যাভি। বিশ্বের নিম্ন ও মধ্য আয়ের ৯২টি দেশকে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা সরবরাহ করবে তারা।

গত ৯ জুলাই কোভ্যাক্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশ টিকার জন্য আবেদন করে এবং গ্যাভি সেটি গ্রহণ করে গত ১৪ জুলাই।

করোনাভাইরাসের কার্যকর টিকা পাওয়া গেলে তা যাতে সারা বিশ্বের মানুষ পায়, তা নিশ্চিত করতে কয়েক মাস ধরে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্যাভি।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরে গ্যাভির কাছ থেকে টিকা পাওয়ার বিষয়ে জানানো হয়

 

সম্প্রতি ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়, যাকে সংক্ষেপে বলা হচ্ছে কোভ্যাক্স।

গত ৩০ জুলাই গ্যাভির বোর্ড সভায় এই কোভ্যাক্সের অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্ট (এএমসি) প্রকল্পের আওতায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯২টি দেশকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকেও সেই তালিকায় রাখা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশ গ্যাভির কাছ থেকে বিভিন্ন রোগের যে টিকা নিচ্ছে তার ১০ শতাংশ মূল্য সরকারকে পরিশোধ করতে হয়, বাকি ৯০ শতাংশ দেয় গ্যাভি।

করোনার টিকা কীভাবে বণ্টন হবে তার জন্য পরিকল্পনার কাজ শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন শামসুল হক।

তিনি বলেন, ‘গোটা বিশ্ব এখন করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ করছে। যে ভ্যাকসিন আগে আসবে, আমার যেন সেটা নিতে পারি, এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।

‘গ্যাভি যখন থেকে পরিকল্পনা জমা নেয়া শুরু করবে, আশা করছি আমরা প্রথম দিনই আমাদের পরিকল্পনা জমা দিতে পারব।’

গ্যাভি ভ্যাকসিন ছাড়াও বাংলাদেশ সরকার সরাসরি টিকা কেনার প্রস্তুতি নিয়েছে।

অক্সফোর্ডের করোনার টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট, বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যালস ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে।

সমঝোতা অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসকে অক্সফোর্ডের তৈরি সার্স-সিওভি-টু এজেডডি ওয়ান টু টু টু (অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিন) সরবরাহ করবে।

বেক্সিমকোর কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে তিন কোটি টিকা কিনবে সরকার। পরিবহনসহ প্রতি ডোজ টিকা দেশে আনতে খরচ হবে পাঁচ ডলার। শুরুতেই টিকা পাবেন করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত ফ্রন্টলাইনাররা।

শামসুল হক বলেন, টিকার জন্য সিনোভ্যাকের সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে। রাশিয়ার স্পুৎনিক এগিয়ে আসছে, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে। সেনোফি, জেএসকে ও ফাইজারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে সরকার।

শামসুল হক বলেন, ‘যদি সেরকম আর্জেন্সি হয়ে তাহলে কীভাবে তাদের ভ্যাকসিন পাওয়া যেতে পারে সে নিয়েও কথা হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘প্রচলিত ব্যবস্থায় তিন কোটি টিকা সংরক্ষণের সামর্থ্য সরকারের আছে। টিকা কেনার সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে যে টিকা সংরক্ষণ ও বিতরণ করা যাবে, সেই টিকাই কেনা হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজির অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের টিকা সংরক্ষণ ও পরিবহন করার মতো সক্ষমতা নেই দেশের।

তিনি বলেন, ‘টিকা উৎপাদন যেমন, তেমনি বাজারজাতকরণও একটি জটিল প্রক্রিয়া। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের সব দেশ টিকা চায়। বিশেষ করে ধনী দেশগুলো; বাংলাদেশও চায়। তবে আমাদের ধনী দেশগুলোর মতো টাকার জোর নেই। এর মধ্যে অনেক ধনী দেশ ভ্যাকসিন সংগ্রহে আগাম টাকা দিয়ে রেখেছে।’

নজরুল বলেন, ‘ধনী দেশের তুলনায় আমাদের দেশের সক্ষমতাও অনেক কম। অন্যান্য দেশ মাথাপিছু ১০টি টিকা নিশ্চিত করলেও বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে ১০০ জনে ১০ জনের টিকা।’

এ বিভাগের আরো খবর