বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঝগড়া নয়, শান্তি

  •    
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ১৮:৫০

সদ্ভাব রেখে একসঙ্গে বসবাসের শর্তে ৪৭ দম্পতির মামলা নিষ্পত্তি করেছে সুনামগঞ্জের একটি আদালত। আদালতে লিখিত অঙ্গীকারও করেছেন স্বামী স্ত্রীরা। আদালত জানিয়েছে, আবার নির্যাতন হলে শাস্তি হবে কঠোর।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী-আমেনা খাতুনের ১৪ বছরের সংসার। নানা বিষয়ে বিরোধ থেকে ভুল বোঝাবুঝি, ঝগড়া।

স্ত্রীর কাছে যৌতুক চাওয়ার অভিযোগে আলীর বিরুদ্ধে মামলা। ছয় মাস কারাগারে থাকার পর স্বামীর উপলব্ধি, তিনি ভুল করেছেন।শাস্তির পথে না দিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে সমঝোতায় এনেছে সুনামগঞ্জের একটি আদালত। বিচারকের কাছে দুই জন অঙ্গীকার করেছেন, শান্তিতে সংসার করবেন তারা।আমেনা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরার ১৪ বছরের সংসার আছিল। হঠাৎ কইরা আমরার মধ্যে বিরোধ লাগছিল। এরপর থাইক্যা আমার স্বামী আমারে নির্যাতন করছে। যৌতুক চাইত। যৌতুক না দেওয়ায় আমারে মারত। বাইধ্য হয়া আমি মামলা করছি।’সমঝোতার পর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি আমার বুলগুলা বুঝতে ফারছি। এহন আদালত যা বলছে আমি মাইন্যা চলব। ছেলে মেয়েদের মুখের দিকে তাখাইয়া আমরা একসাথে সংসার করমু।’স্বামী জেলে, যতই ঝগড়া হোক, এই সময়টা ভালো থাকেননি আমেনা। সমঝোতায় আসার পর স্বস্তিতে তিনিও। বলেন, ‘আমি আদালতের রায়ে খুশি অইছি। আমার চাইরটা ছেলে মেয়ে আছে। হেরার ভবিষ্যতের খতা চিন্তা খইরা আমরা একসাথে থাকমু।’ কেবল আলী-আমেনা দম্পতি নয়, পারিবারিক সহিংসতার বুধবার ৪৭টি মামলায় সমঝোতার পথে গেছেন সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাকির হোসেন। স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মামলায় আসামিদের কারাগারে না পাঠিয়ে ৯৪ জনকে একত্রে বসবাস করার শর্তে আপোষ নিষ্পত্তি করেছেন বিচারক। এ সময় স্বামী-স্ত্রীদের ফুল দিয়ে বরণও করা হয়।আদালতের আপোষনামায় ৪৭ দম্পত্তিই লিখিত অঙ্গীকার করেন, তারা ঝগড়া করবেন না। সন্তান ও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে সংসার পালন করবেন তারা। সংসারে শান্তি নষ্ট হয় এমন কিছু করবেন না। স্বামী স্ত্রীকে আর স্ত্রী স্বামীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেবেন। অঙ্গীকার নামায় আরও লেখা হয়, স্ত্রী বা তার মা-বাবা ও অভিভাবকের কাছে যৌতুক দাবি করবেন না স্বামী। আর পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমানিল্য ও বিরোধ দেখা দিলে নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করবেন। কখনও স্ত্রীকে নির্যাতন করবেন না স্বামী।অঙ্গীকার ভঙ্গ করে স্ত্রীকে নির্যাতন করলে বা যৌতুক দাবি করলে স্ত্রী আবার আইনি ব্যবস্থা নেবেন। আর তখন কঠিন শাস্তি হবে, এটাও জানিয়ে দেন বিচারক।সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পিপি নান্টু রায়ের মতে, এই রায় যুগান্তকারী। তিনি বলেন, ‘সকল মামলার বাদী বিবাদীকে আপোষে মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তারা ঝগড়া-বিবাদ না করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করবেন। আশা করি তারা কথা রাখবেন। এখানে শাস্তি হওয়াটা মুখ্য না।’

এ বিভাগের আরো খবর