বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ঘরে উচ্চস্বরে কাঁদছিল আট বছরের ফারজানা। এলাকাবাসী তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে, শিশুটির মা মৃত। বাবা নেই ঘরে।
শিশুটির নানি বাড়ি পাশেই। খবর পেয়ে ছুটে আসে স্বজনরা। ফারজানাকে কোলে তুলে নেয়। আর পুলিশ এসে উদ্ধার করে মরদেহ। পাশের একটি ইটভাটা থেকে আটক করা হয় গৃহবধূর স্বামীকে।
অভিযোগ উঠেছে, পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পারভীন আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন স্বামী আব্দুল খালেক।
বুধবার ভোরে সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের জামাইপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। পারভীন এই গ্রামের আব্দুর রহিম বাবুর মেয়ে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, ঘরের তালা ভেঙে পারভীনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর এলাকাবাসীর সাহায্যে গ্রামের ভাটপাড়ার হাবিবুর রহমানের ইটভাটা থেকে খালেককে আটক করা হয়।
প্রাথমিক সুরতহালে পারভীনের গলায় দড়ির প্যাঁচের দাগ পাওয়া গেছে। এ থেকে পুলিশের ধারণা, শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে তাকে।
খালেকের বিরুদ্ধে একই এলাকার এক নারীর সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ আছে। এ নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে খালেকের সঙ্গে পারভীনের বিরোধ চলে আসছিল বলেও জানান ওসি।
নিহতের ভাই রফিকুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম জানান, আট বছর আগে হাজীপুর গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আব্দুল খালেকের সঙ্গে বোনকে বিয়ে দেন তারা। তিন বছর ধরে পরিবার নিয়ে রাজনগর জামাইপাড়ায় চরভরাটি এলাকায় সরকারি খাস জমিতে ছাপড়া তুলে থাকতেন খালেক।
প্রতিবেশীরা জানান, মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে খালেক তার স্ত্রী পারভীনকে মারধর করেন। বুধবার সকালে তাদের মেয়ে ফারজানার কান্না শুনে তারা বাইরের দিক থেকে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। এ সময় পারভীনকে কাঁথা মোড়া অবস্থায় দেখতে পান।
দুপুরে পারভীনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।