সাতক্ষীরায় একই পরিবারের চার জনকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামি রাহানুর নিয়মিত ক্রাইম পেট্রল দেখতেন বলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সেই অভিজ্ঞতা থেকেই রাহানুর এই হত্যাকাণ্ড চালানোর ছক এঁকে থাকতে পারেন বলে ধারণা সিআইডির।
ঘটনার এক মাস পাঁচ দিনের মাথায় রোববার সিআইডি আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে। মঙ্গলবার এর বিস্তারিত তুলে ধরেন সিআইডির অ্যাডিশনাল ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাদকাসক্ত রাহানুর নিয়মিত ক্রাইম পেট্রল দেখতেন। হত্যাকাণ্ডের আগে সে একটা টাওয়াল পরে নেয় এবং হত্যা শেষে কোথাও কোনো প্রমাণ রাখে নাই।
সিআইডি তদন্তে আরও বলা হয়, রাহানুর স্থানীয় একটি দোকান থেকে কোমল পানীয়র বোতল কিনে এর মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। পরবর্তীতে মিশ্রিত পানীয় সে তার ভাই, ভাবী, ভাতিজী ও ভাতিজাকে খেতে দেয়।
‘তারা ঘুমিয়ে পড়লে রাত তিন থেকে সাড়ে তিনটার দিকে ছাদের দরজা দিয়ে ভাইয়ের রুমে প্রবেশ করে চাপাতি দিয়ে প্রথমে তার ভাই, পরবর্তীতে ভাবীসহ বাকিদের হত্যা করে।’
গত ১৪ অক্টোবর রাতে কলারোয়ার খলসি গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় শাহিনুরের শাশুড়ি ময়না বেগম বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় গ্রেফতার রাহানুর ২১ অক্টোবর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাহানুর একজন হতাশাগ্রস্ত মানুষ। সে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল, কিন্তু সুবিধা করতে পারেন নাই। সেখান থেকে এসে ড্রাইভারের চাকরি করত। নয় বছরে আগে বিয়ে করে ফাহিমাকে। সন্তান না হওয়ার কারণে চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্ত্রী ফাহিমার সাথে তার ডিভোর্স হয়।
সিআইডি থেকে আরও জানানো হয়, বেকার অবস্থায় ভাই ও ভাবির সংসারে অবস্থান করে রাহানুর। ভাবী সাবিনা খাতুন মাঝে মধ্যে টাকার জন্য রুঢ় আচরণ করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ এবং বেকার জীবনে ভাবীর দুর্ব্যবহারের কারণে এক সময় ভাই-ভাবীকে হত্যার পরিকল্পনা করে রাহানুর।