দশ বছর আগে ২০১০ সালের ২৪ জুন রাজধানীর আদাবর এলাকায় নবোদয় হাউজিংয়ে রাস্তার পাশে বস্তাবন্দি উদ্ধার হয় শিশু খন্দকার সামিউল আজিম ওয়াফির লাশ।
মোহম্মদপুরের গ্রিনউড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্লে-গ্রুপের ছাত্র ছিল সে। শিশুটিকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছিল।
পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশুকে কে হত্যা করল? কার শত্রু হয়েছিল সে?
আসামির কাঠগড়ায় তারই মা আয়েশা হুমায়রা এশা ও তার পরকীয়া প্রেমিক শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কু। পুলিশের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এই দুই জনের ঘনিষ্ঠতার কোনো মুহূর্ত দেখে ফেলার কারণে প্রাণ গেছে সামিউলের।
মা এশা দায়ী কিনা দীর্ঘ শুনানি শেষে অবশেষে আগামী ৮ ডিসেম্বর সেই সিদ্ধান্ত জানাবে আদালত।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শোনা শেষে রায়ের এ দিন ঠিক করেন।
এ আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ফারুক উজ্জামান ভূঁইয়া (টিপু) বলেন, ‘সোমবার মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছি। আদালত যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ধার্য করেছেন।’
তিনি জানান, সামিউলের মা এশা জামিনে ছিলেন। তিনি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চাইলেও সোমবার আদালতে হাজির হননি। এ কারণে আদালত জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। মামলার অপর আসামি এশার কথিত পরকীয়া প্রেমিক শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কু (৪৩) পলাতক। অর্থাৎ এ মুহূর্তে দুই আসামিই কারাগারের বাইরে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ২৩ জুন শিশু সামিউল তার মা এশার সঙ্গে শামসুজ্জামান আরিফের ঘনিষ্ঠতা দেখে ফেলেছিল বলেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করতে ফ্রিজে ঢোকানো হয়। পরে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে পরদিন রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় যাতে মানুষের চোখে পড়ে।
এ ঘটনায় তার বাবা কে এ আজম সেদিনই আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেন।
এশা ও শামসুজ্জামান আরিফ উভয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার ওসি কাজী শাহান হক ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর এশা ও শামসুজ্জামান আরিফের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে।