মাস্ক না পরে ঘরের বাইরে এলে আরও বেশি জরিমানা করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সরকার মনে করে, রোগী বাড়তে থাকার প্রেক্ষিতে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।
- আরও পড়ুন: ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি ঢিলেঢালা
সচিব বলেন, ‘মাস্কের বিষয়টি (মন্ত্রিসভা বৈঠকে) খুব স্ট্রংলি এসেছে। গতকাল কমিশনাররা জানিয়েছেন, তারা ম্যাসিভলি ফাইন করছেন। কাল সারা দেশে কয়েক হাজার লোককে ফাইন করা হয়েছে।’
‘আমরা বলেছি, আরও এক সপ্তাহ দেখতে। ফাইনেও যদি কাজ না হয় তাহলে মটিভেশন কর, তারপরে আরেকটু স্ট্রং পানিশমেন্টে যেতে হবে।’
আরও কঠোর হলে কী হবে- এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘ফাইন বাড়িয়ে দিতে পারে। হয়ত এক হাজার টাকা, ৫০০ টাকা ফাইন করল সেটাকে পাঁচ হাজার টাকা করে দিল। আমরা আরেকটু স্ট্রং ব্যবস্থায় যেতে বলেছি।
মাস্ক না পরার কারণে যারা ভ্রাম্যমাণ আদালত থেকে জরিমানা বা সাজার মুখে পড়বেন, তাদের হাতে মাস্ক তুলে দেওয়া হবে।
আনোয়ারুল বলেন, ‘যারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন, তারা সঙ্গে মাস্ক নিয়ে যাবেন, যাতে মানুষকে জরিমানা করার পর সেগুলো দিয়ে দেয়া যায়।
সবার মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে খুলনা ও চট্টগ্রাম ‘স্ট্রং অ্যাকশনে যাচ্ছে’ বলেও জানান সচিব। বলেন, রোববার ঢাকার ৩৭টি জায়গায় মোবাইল কোর্ট চালানো হয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী আজকেও বলেছেন, যেভাইবেই হোক মানুষকে আরও বেশি বেশি করে প্রচার করো, ফোর্স করো, যেভাবেই হোক মানুষ যেন মাস্ক ইউজ করে। মাস্ক ইউজ না করলে ভ্যাকসিন বলেন, ওষুধ বলেন কোনো কিছুতেই কাজ হবে না।’
- আরও পড়ুন: মাস্ক না পরার ‘যত কারণ’
শীত আসার আগে আগে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সরকার আগেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে। প্রথমে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি ঘোষণা করা হয়। এতেও কাজ না হওয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করছে।
তবে এর পরেও মাস্ক পরায় অনীহা স্পষ্ট। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বিষয়টি নিয়ে হতাশাও প্রকাশ করেছেন।
গত মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পরার পর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে ২১ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল শিক্ষা বিভাগ। আদেশ অমান্য করায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বিপুল সংখ্যক মানুষকে জরিমানা করে। তখনও এখনকার মতোই পরিস্থিতি দেখা গেছে।
সংক্রমণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী মাস্ক না পরে বা অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাইরে চলাচল করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।
- আরও পড়ুন: মাস্ক না পরলে মোবাইল কোর্টে সাজা
অবশ্য গত ১৩ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ঘোষণায় জেলা প্রশাসক ও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আইনটি সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। সেই নির্দেশনা এখনও বহাল আছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনে যাচ্ছেন না রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা সীমিত করা হবে।
বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কাজ করছে বলেও জানান সচিব। বলেন, যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত ১২ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এক অনুষ্ঠানে জানান, কানাডায় বেশ কয়েকজনের অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছেন তারা। এদের মধ্যে বেশিরভাগই সরকারি কর্মকর্তা।
মন্ত্রী সেদিন কোনো নাম প্রকাশ করেননি। তবে ২২ নভেম্বর হাই কোর্ট এক স্বপ্রণোদিত আদেশে পাচারকারীদের নাম চেয়েছে।