বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণ রোধে মানুষ যদি মাস্ক না পরে, তাহলে তার মন্ত্রণালয়ের কী করবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় ৪৮ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন শেষে স্থানীয় হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণের হার তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কন্ট্রোল করতে পারবে না। আমরা যদি গাড়িতে ও বাইরে মাস্ক ব্যবহার না করি, তাহলে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাবে। মাস্কের জন্য সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় কী করবে। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সকল সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কোনো ব্যক্তি সেবা পাবে না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সামনে শীতের সময়। ইতিমধ্যে ইউরোপে করোনাভাইরাসের অনেক লোক মারা যাচ্ছে ও সংক্রমিত হচ্ছে। তাই আমাদের সর্তক থাকতে হবে এখন থেকেই। শীতের সময়ের জন্য আমাদের প্রস্তুতি আছে। কিন্তু আমাদের সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই অর্থনৈতিকভাবে আমাদের দেশ অনেক ভালো আছে। কোনো লোক না খেয়ে থাকে না এবং লোকজন এখনও কাজ কর্ম করছে। করোনার কারণে আমেরিকা ও ইউরোপের অনেক রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।’
উন্নয়নের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের জন্য দেশে কুপি আর হারিকেনের পরিবর্তে মানুষের ঘরে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে। বাঁশের পুলের পরিবর্তে এখন ব্রিজ চোখে পড়ে। এ ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষতায় না থাকলে এসব হতো না।
বিএনপির রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের মহামারি করোনাভাইরাস ও বন্যার সময় মানুষের পাশে দেখা যায় নাই। তারা শুধু জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন আর টেলিভিশনের কথা বলে। যে রাজনীতি মানুষের ক্ষতি হয় ও সুখ-শান্তি দিতে পারে না, আমরা সেই রাজনীতি প্রত্যাখান করি এবং সেই দলকেও আমরা বিশ্বাস করি না।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তুলনা করে, আমাদের দেখতে হবে। আমাদের দেশে কত লোক মারা গেছে ও কত লোক সুস্থ হয়েছে। এর ওপরে বিচার করলে মানুষ দেখতে পারবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়লয় কেমন কাজ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালো কাজ করেছে বলেই অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের মৃত্যুর হার অনেক কম। বর্তমানের সংক্রমণের হার কম এবং সুস্থতার হার প্রায় ৮১ শতাংশ কম।’
অনুষ্ঠানে হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জ্যোতির সভাপতিত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা, উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দীনসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা শেষে বেলা তিনটায় মানিকগঞ্জের ২৫০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন মন্ত্রী। তিনি বিভিন্ন উপজেলার ১০টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক গোলাম মোস্তাফা ও কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের অধক্ষ্য মো. আখতারুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।