রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় গ্রেফতার মনির হোসেন দুবাই পালাতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব। শনিবার বেলা ১১টায় তার ফ্লাইট ছিল। তবে এর আগেই র্যাবের জালে ধরা পড়েন তিনি।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশত্যাগের আগেই শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মনিরকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা, অস্ত্র ও মদ উদ্ধার করা হয়েছে।
কী কারণে মনির দুবাই পালাতে চেয়েছিলেন, জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মনির এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছেন। তাকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে এ ব্যাপারে জানা যাবে।’
র্যাব জানিয়েছে, মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের কর্মজীবন শুরু হয় বিক্রয়কর্মী হিসেবে। কয়েক বছরের মধ্যে তিনি লাগেজ ব্যবসা থেকে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাজনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে ভূমি জালিয়াতিতে লিপ্ত হন মনির। মালিক হন দুই শতাধিক প্লট ও ফ্ল্যাটের। এ ভাবে তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
র্যাবের অভিযান চলাকালে মনিরের বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি গুলি, চার লিটার বিদেশি মদ, ৩২ টি নকল সিল, ২০ হাজার ৫০০ রিয়াল, ইউএস ৫০১ ডলার, চায়না ৫০০ ইয়েন, ভারতীয় ৫২০ রুপি, এক হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার, জাপানি ২ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন, মালয়েশিয়ান ৯২ রিঙ্গিত, হংকং ১০ ডলার, ইউএই ১০ দিরহাম ও থাই ৬৬০ বাথ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া মনিরের বাড়ি থেকে ৬০০ ভরি সোনার অলংকার, ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, তার বাসার নিচে পার্কিং থেকে ২ টি বিলাসবহুল প্রাডো গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়িগুলো মনির ও তার পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করতেন। কিন্তু র্যাবকে কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি মনির।
এ ছাড়া মনিরের মালিকানাধীন অটোকার সিলেকশন নামে শোরুম থেকে তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এগুলোও অবৈধ বলে জানিয়েছে র্যাব।র্যাবের অভিযানে মনিরের বাসায় এবং অটোকার সিলেকশন অফিস থেকে রাজউক ও ভূমি-সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের ভুয়া সিল মোহর পাওয়া গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
তিনি বলেন, এই সিলগুলো ব্যবহার করে ভূমি আত্মসাতের জন্য ভুয়া কাগজপত্র বানাতেন মনির।