সৌগত বসু, ঢাকা
নিয়োগবিধি সংশোধনসহ বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে সারা দেশের স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা। তাদের দাবি পূরণে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলেও তারা জানিয়েছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন নামে সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের দাবি তুলে ধরে এই ঘোষনা দেন তারা। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- নিয়োগবিধি সংশোধনসহ ক্রমানুসারে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বেতন গ্রেড ১৬তম থেকে যথাক্রমে ১১, ১২, ১৩তম গ্রেডে উন্নীতকরন।
দাবি পুরণ না হলে তাদের কর্মবিরতির ফলে আগামী ৫ ডিসেম্বর হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইনসহ দেশের এক লাখ বিশ হাজার আউটরিচ রুটিন টিকাদান কর্মসূচী বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহবায়ক শেখ রবিউল আলম বলেন, ‘৭০ দশকে পরীক্ষামূলকভাবে এই স্বাস্থ্য সহকারীদের বসন্ত ও ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব এককভাবে দেয়া হয়। ১৯৭৯ সালে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী (ইপিআই) কর্মসূচি শুরু হয়। এই কর্মসূচির আওতায় তাদের ওপর এক লাখ বিশ হাজার আউটরিচ রুটিন টিকাদানের দায়িত্ব দেয়া হয়। আমরা সফলভাবে এখন পর্যন্ত শিশুদের যক্ষা, পোলিও, ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশি, ডিপথেরিয়া হেপাটাইটিস-বি হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও হাম-রুবেলার টিকা প্রদান করে আসছি।’
তিনি বলেন, ‘১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের এক মহাসমাবেশে আমাদের বেতন বৈষম্য নিরসনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে ২ জানুয়ারি তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কমিটি করে দিয়েছিলেন তবে আজও আমাদের বেতন বৈষম্য দূর হয়নি।’
‘প্রজাতন্ত্রের পদোন্নতি বিধি অনুযায়ী একজন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারী তিন থেকে সাত বছর পরপর পদোন্নতি পান। কিন্তু একজন স্বাস্থ্য সহকারী ২০ থেকে ২৫ বছর পরও পদোন্নতি পেয়ে স্বাস্থ্য পরিদর্শক হতে পারেন না। অনেকে এমন সময় পদোন্নতি পান যখন চাকরির বয়স থাকে ৫ থেকে ৭ মাস। পদোন্নতি হলেও বেতন বাড়ে না এক টাকাও।’
তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূলে এ স্বাস্থ্য সহকারীদের কাজের অর্জনেই বাংলাদেশ আজ টিকাদানে বিশ্বে রোল মডেল ও সরকার প্রধান পেয়েছে ৭ টি পুরষ্কার। আমাদের বদৌলতে এমডিজি-৪ অর্জন হয়েছে, সাউথ সাউথ পুরষ্কার, দক্ষিন এশিয়ার শ্রেষ্ঠ টিকাদানকারী দেশ, হাম-রুবেলা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পুরষ্কার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যাকসিন হিরো উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এই সম্মাননাগুলোর কারিগর স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিসট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ওয়াসিউদ্দিন রানা, সভাপতি আসাদুজ্জামান পান্নাসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য সহকারীরা।