সিরাজগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে চার জন র্যাবের হাতে ধরা দিয়েছে। ভোরে ঘেরাও করার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি থেকে চার জনকে বের করে নিয়ে আসে বাহিনীটি।
বৃহস্পতিবার ভোরে জেলার শাহাজাদপুরের উকিলপাড়ায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান শুরু করে র্যাব-১২ এর একটি দল।
পরে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার জানান, আস্তানা থেকে দুইটি বিদেশি পিস্তল, দু্ইটি রামদা, একটি চাপাতি এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।’
র্যাব জানায়, আত্মসমর্পণ করা চার জনের মধ্যে কিরণ শামীম পাবনা সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে নব্য জেএমবির দ্বিতীয় প্রধান।
অন্য তিন জনের মধ্যে নাইমুল ইসলামের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়ায়। আতিউর রহমানের বাড়ি, দিনাজপুরে। আমিনুল ইসলারের বাড়ি সাতক্ষীরার তালায়।
র্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন মিরাজ ও স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক ফজলুল হকের বাড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে একজন নারী ভাড়াটিয়া বসবাস করছিলেন। হঠাৎ গত কয়েক মাস আগে বগুড়া থেকে দুজন অপরিচিত লোক এখানে বাস করছিলেন। তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় র্যাব শুক্রবার ভোরে পুরো উকিলপাড়া ঘিরে ফেলে।
সেখানে গোলাগুলির তথ্যও মিলেছে।
র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার বলেন, ‘ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা যে হতবিহ্বল হয়ে গেছি। তাতে আমাদের কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কারণ, আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি ছিল। আমরা নিরাপদ স্থানে সরে এসে ওই বাড়িটা আমরা ঘিরে ফেলতে সক্ষম হয়েছি। আমরা ধারণা করছি, বাড়ির ভেতরে একাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি অবস্থান করছেন। বিস্তারিত আমরা অভিযান শেষে জানাতে পারব।’
ভোর সাড়ে পাঁচটার গোলাগুলির শব্দে ঘুম ভাঙ্গে স্থানীয়দের। উৎসুক জনতাও অবস্থান নেয় আশপাশে।
মহিউদ্দিন মিরাজ জানান, শনিবার রাজশাহীতে এক অভিযানে কয়েকজনকে আটক করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে যায় তাদের একটি দল।
মিরাজ বলেন, ‘ওই বাড়ি থেকে র্যাব সদস্যদের দিকে গুলি ছোড়া হয়। এরপর বাড়িটি ঘিরে ফেলে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়।’
এ সময় আশেপাশের মানুষ এলাকায় ভিড় করে। নিরাপত্তার স্বার্থে আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়। পরে ওই বাড়িতে থাকা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করা হয়।
অভিযান শেষে জানানো হয়, প্রায় ২৫ দিন আগে শাহজাদপুরের বাড়িটি ভাড়া নেন দুই জন ছাত্র। বাড়িটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা পল্লী চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ওই দুই ছাত্রের অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র নিশ্চিত হয়েই তিনি ভাড়া দিয়েছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, নতুন ভাড়াটিয়ারা নামাজের সময় ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে কম। যে কারণে তাদের সম্পর্কে জানার খুব একটা সুযোগ হয়নি তাদের। মহল্লার মধ্যে জঙ্গি আস্তানার খবরে উদ্বেগও জানিয়েছেন তারা।