সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে পুলিশের বহিষ্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়ার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড এবং পোশাক উদ্ধার করেছে পুলিশ।বৃহস্পতিবার রাতে ডোনা সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে আকবরের ব্যবহৃত এসব জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয় বলে জানান কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসআই) শামসুদ্দোহা।এসআই আকবর সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ রায়হান আহমদ হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত।গত ৯ নভেম্বর কানাইঘাট সীমান্ত থেকে আকবরকে গ্রেফতার করা হয়। ভারতে পালানোর সময় সাদা পোশাকের পুলিশ তাকে আটক করে বলে সেদিন জানিয়েছিলেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।যদিও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছিল আকবর ভারতে পালিয়ে গেছেন। আকবরকে কানাইঘাট সীমান্তের ওপারে ভারতের একটি খাসিয়া পল্লীতে আটকের একটি ভিডিও ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে।আকবরকে আটকের পর গত ১১ নভেম্বর ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ নামে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আকবরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সিম উদ্ধারের দাবি জানিয়েছিলেন রায়হানের ছোটভাই রাব্বি আহমদ তানভীর। সেদিন তিনি বলেন, ‘এগুলো উদ্ধার করা হলে রায়হানকে কীভাবে ধরে আনা হলো, ধরে আনার পর আকবর কাদের সঙ্গে আলাপ করেছেন এবং পালিয়ে যাওয়ার আগে কাদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন তার অনেকটাই বেরিয়ে আসবে।’আকবরকে গ্রেফতারের পরদিন ১০ নভেম্বর তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হলেও তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এরপর আকবরকে কারাগারে পাঠায় আদালত।এরআগে এই ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য এএসআই আশেক এলাহি, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস এবং হারুনুর রশীদকে গ্রেফতার করে রিমান্ড নেয় পিবিআই। তবে রিমান্ড শেষে তারাও আদালতে স্বীকারোক্তিমলক জবানবন্দি দেননি।রায়হানের মা সালমা বেগম অবশ্য প্রথম থেকেই পিবিআই’র তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। তার দাবি, পিবিআই পুলিশেরই একটি সংস্থা। তাদের পক্ষে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয়। এজন্য এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে আসছেন তিনি।নগরীর আখালিয়া নিহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে ১০ অক্টোবর রাতে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরের দিন ১১ অক্টোবর সকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে নির্যাতনের সত্যতা পায়। এই ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়াসহ চার জনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর আকবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে গা ঢাকা দেন।পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনায় মামলাটির তদন্ত পিবিআইয়ের ওপর ন্যস্ত হলে ১৯ অক্টোবর ফাঁড়ির তিন কনস্টেবল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের বর্ণনা ও নির্যাতনকরীদের নাম বলেন। রায়হানকে নির্যাতনের মূল হোতা হিসেবে উপপরিদর্শক (এসআই) আকবরের নাম বলেন তারা।
এসআই আকবরের মোবাইল ফোন ও কাপড় উদ্ধার
রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আকবরকে আদালতে তোলা হলেও তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এরপর আকবরকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
-
ট্যাগ:
- রায়হান
এ বিভাগের আরো খবর/p>