বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আদালতেও বেপরোয়া মজনু

  •    
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ২০:০৬

ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের মজনুকে দেখে তাকে অপরাধী হিসেবে মানতে রাজি ছিলেন না বহুজন। তবে আদালতে তার সব অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। রায়ের দিন মনজু মিয়া আরও বেশি আলোচিত হয়েছেন তার উগ্র আচরণ দেখিয়ে। তাকে সামলাতে বেগ পেতে হয় চার/পাঁচ জন পুলিশকে। গালাগাল, খিস্তিখেউড়ে বিরক্ত করেছেন সবাইকে। পুলিশের হাত কামড়ে ধরেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় দণ্ডিত মজনু মিয়া রায় শুনতে আদালতে এসে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছেন। হঠাৎ হিংস্রও হয়ে উঠেন তিনি। কামড় দেন পুলিশের হাতে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া এই আসামির আচরণ নিয়ে বিরক্ত হয়েছেন বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ সদস্য, সাংবাদিকরা।

মজনু মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ফুটপাত থেকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করেছেন।

এই ঘটনায় করা মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। পরে র‌্যাব তদন্ত করে মজনুকে শনাক্ত করে।

ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের মজনুকে দেখে তাকে অপরাধী হিসেবে মানতে রাজি ছিলেন না বহুজন। তবে আদালতে তার সব অপরাধ প্রমাণ হয়েছে।

রায়ের দিন মনজু মিয়া আরও বেশি আলোচিত হয়েছেন তার উগ্র আচরণ দেখিয়ে।

দুপুরের আগে আদালতে হাজির করার পর তাকে ঘিরে পুলিশের নিরাপত্তা ছিল অনেক বেশি। আশেপাশের লোকজন বলছিলেন, এমন একজন মানুষের জন্য এত পুলিশ কেন।

তবে কিছুক্ষণ পর বোঝা যায় কেন।

আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ: মজনুর যাবজ্জীবন

 

মজনুকে যখন আদালতে নেয়া হচ্ছিল, তখন তিনি টানাহ্যাঁচড়া করতে থাকেন। এ সময় তাকে সামলাতে পুলিশ সদস্যদেরকে বেগ পেতে হচ্ছিল।

মজনু চিৎকার করছিলেন, বলছিলেন তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তাকে যে ধরেছে, তাকে ধরে আনার দাবিও করেন।

এক পর্যায়ে শুরু করেন খিস্তি খেউড়। আদালতে সাংবাদিক ও আইনজীবী দেখে আরও ক্ষেপে উঠেন তিনি। আরও উচ্চস্বরে চিৎকার করতে থাকেন।

পরে বিরক্ত হয়ে সবাইকে এজলাস থেকে বের করে রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনে কারাগারে ফেরার সময় আরও হিংস্র হয়ে উঠেন মজনু মিয়া। যে পুলিশ সদস্য তার হাতকড়া লাগানো রশি ধরে রেখেছিলেন, তার হাতে দেন জোরে কামড়।

কামড়ের জোর এত বেশি ছিল যে, মুখে রক্ত চলে আসে মজনুর। কামড় ছাড়াতে টানাটানির এক পর্যায়ে একটি দাঁতও পড়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

মজনুর আইনজীবী রবিউল ইসলাম দাবি করেছেন, তার মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। তবে তার আচরণ নিয়ে তিনি নিজেও ক্ষিপ্ত। নিউজবাংলাকে এই আইনজীবী বলেন, ‘এটা ঠিক যে মজনু খুবই উদ্ধত ও খারাপ আচরণ করেছে। তার এই আচরণে আমরাও বিরক্ত।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ বলেন, ‘মনজু যেভাবে শক্তি প্রদর্শন করে গালিগালাজ ও খারাপ আচরণ করছে ওর আরও শাস্তি পাওনা ছিল। তিনি তার চরিত্র বুঝিয়েছেন।’

পুলিশের উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাকে দেখে মনে হয় শরীরে শক্তি নেই। কিন্তু আমরা চার/পাঁচ জন মিলেও তাকে শান্ত রাখতে পারছিলাম না।’

আদালতে দেয়া অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাস্তার পাশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন মজনু।

একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরে আসার পর ওই ছাত্রী অটোরিকশা নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। পরদিন সকালে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।

 

গত ৮ জানুয়ারি মজনু মিয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ৯ জানুয়ারি তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশকে অনুমতি দেয় আদালত। ১৬ জানুয়ারি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মজনু।

১৬ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মজনুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক আবু বক্কর।

২৬ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক কামরুন্নাহার ভার্চুয়াল আদালতে মজনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এ বিভাগের আরো খবর