প্রাইম ব্যাংকের সাভারের গণকবাড়ি শাখায় এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হওয়ার ঘটনায় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের তদন্ত শুরু হয়েছে।
সোমবার তদন্ত দল ব্যাংকটির ওই শাখা ও সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বাসস্থান পরিদর্শন করেছে।
মঙ্গলবার ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের ব্র্যান্ডস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ডিপার্টমেন্টের পাঠানো এক চিঠিতে ওই ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। ওই গ্রাহকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।
বেসরকারি এ ব্যাংকটির স্থানীয় শাখায় টাকা জমাতেন সাবেক পোশাকশ্রমিক মাহমুদা নাছরিন। সম্প্রতি তিনি বাসায় চেক বই খুঁজে না পেয়ে ব্যাংকে গিয়ে দেখেন তার তিন লাখ টাকা সঞ্চয় থেকে দুই লাখ তুলে নিয়েছেন ‘আকাশ’ নামে একজন। ব্যাংকের বিরুদ্ধে উঠেছে গাফিলতির অভিযোগ।
নিউজবাংলায় গত ১৩ নভেম্বর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে নারীর ২৫ বছরের সঞ্চয় ‘উধাও’
তদন্তের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে প্রাইম ব্যাংকের গণকবাড়ি শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ব্রাঞ্চ শাহতাব রিজভী বলেন, ‘প্রাইম ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, আমি কোনো সাংবাদিক বা কোনো মিডিয়ার সাথে কথা বলার জন্য পারমিটেড না।’
গ্রাহক মাহমুদা নাছরিন মঙ্গলবার মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, সোমবার তাকে ব্যাংকটির গণকবাড়ি শাখায় ডাকা হয়েছিল। বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তাকে সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।মাহমুদা নাছরিন বলেন, ‘ওরা আমাকে চার্জ (চাপ প্রয়োগ) করলো কি যে, আপনি টাকা উঠায়ে নিছেন। এক টাকা দুইবার নিতে চান? এই-সেই বলল। পরে আমি বললাম, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড আপনারা জানতে পারেন। হুমকি-ধামকি দেয়ার পরে ওনারা বলছে, আপনি আমাদের বলতেন। আমাদের হেড অফিসে যাইতেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আসলে আমারে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল ব্যাপারটা সত্য না মিথ্যা তা জানার জন্য। বারবার ওরা আমার ছেলেকে হাজির করতে বলছিল।’
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) ব্যাংকটির হেড অব ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন্স নাজমুল করিম চৌধুরীর স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়, ‘প্রাইম ব্যাংকের গণকবাড়ি শাখায় গ্রাহক মাহমুদা নাছরিনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ সত্য নয়। গত ১১ অক্টোবর গ্রাহক তার স্বামীসহ শাখায় এসে অপারেশন ম্যানেজারের কাছে ঘটনাটি জানালে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। তার অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ০৮ অক্টোবরের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়।
‘গ্রাহক ও তাঁর স্বামী ভিডিও দেখে সঙ্গে সঙ্গে চেক বহনকারীকে তাদের ছেলে হিসেবে চিহ্নিত করেন। তারা জানান যে, ছেলে চেক বই নিয়ে পালিয়ে গেছে। শাখা ব্যবস্থাপক তাকে চেকটির ছবিও তুলে দেন।
গ্রাহকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের নিরীক্ষা দল (অডিট টিম) ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত সম্পন্ন হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’
৮ অক্টোবরের ফুটেজ দেখানোর ব্যাপারে মাহমুদা নাছরিন বলেন, ‘আমাকে দুই ঘণ্টা ব্যাংকে বসায় রাখছিল। পরে আমি অসুস্থ হইয়া যাই। আমাকে যে সিসিটিভি ফুটেজ দ্যাখাইছিল, সেখানে কাউরে চিনতে পারি নাই। অফিসার শাহিনকে আমার ছেলের ছবি দিতে গেছিলাম। হে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করছে।’