সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ রায়হান আহমদ হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের বরখাস্ত উপ পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়াকে সাত দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।রিমান্ড শেষ মঙ্গলবার দুপুরে আকবরকে আদালতে নেয়া হয়। তবে তিনি জবানবন্দি দিতে রাজি হননি।এসময় তদন্ত কর্মকর্তা পুনরায় রিমান্ড আবেদন না করায় আকবরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আবুল কাশেম।পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।আকবর হোসেন ভূইয়াকে গত ৯ নভেম্বর দুপুরে কানাইঘাটের সীমান্ত ডোনা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ভারতে পালানোর সময় তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি করে পুলিশ।তবে সীমান্ত এলাকা সূত্রে জানা গেছে, আকবরকে কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তের ওপারে খাসিয়া বাসিন্দারা আটক করে বাংলাদেশে পাঠায়। তাকে আটকের একাধিক ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, তাকে আটককের পর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে আকবর বলছেন, ৫/৬ জন মিলে রায়হানকে মারা হয়েছিল। এতে তিনি মারা গেছেন। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে তিনি পালিয়ে গেছেন।
আটকের পরদিন ১০ নভেম্বর আদালতের মাধ্যমে তাকে রিমান্ডে নেয় রায়হান হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। আটককারীদের কাছে নির্যাতনের কথা স্বীকার করলেও রিমান্ড থেকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে এ ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।এর আগে এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আরও তিন পুলিশ সদস্য এএসআই আশেক এলাহি, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস এবং হারুনুর রশীদকে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তারা আদালতে জবানবন্দি দেননি।সিলেট নগরীর আখালিয়া নিহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে ১০ অক্টোবর রাতে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে আসা হয়। পরের দিন ১১ অক্টোবর সকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁঞাসহ চার জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর আকবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে গা ঢাকা দেন।অপরদিকে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনায় মামলাটির তদন্ত পিবিআইয়ের ওপর ন্যস্ত হলে ১৯ অক্টোবর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্তব্যরত তিন কনস্টেবল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের বর্ণনা ও নির্যাতনকরীদের নাম বলেন। রায়হানকে নির্যাতনের মূল হোতা হিসেবে উপপরিদর্শক (এসআই) আকবরের নাম বলেন তারা।