বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের লিখিত পরীক্ষা বাদ দিয়ে বিশেষ বিবেচনায় ভাইভা নেয়ার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ চলছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ শুরু করে বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদ। সমাবেশ শেষ হয় পৌনে দুইটার দিকে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের দাবি, ২০১৭ ও ২০২০ সালে বার কাউন্সিলের এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বিশেষ বিবেচনায় ভাইভার মাধ্যমে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে হবে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা বার থেকে আগত শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সমাবেশে অংশ নেন। তারা ‘তারিখ চাই, তারিখ চাই, ভাইভার তারিখ চাই’ স্লোগান দেন।
কুমিল্লা থেকে আগত লুতফর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করব। অথচ আজ নিজেদের অধিকারের দাবিতে আমরা রাস্তায়। এর থেকে লজ্জার কিছু হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের নিয়ে ফুটবল খেলছেন। আইনমন্ত্রী আশ্বাস দিচ্ছেন, বলছেন বার কাউন্সিলের সাথে আলাপ হয়েছে। আর বার কাউন্সিল বলছে, হয়নি।’
বার কাউন্সিলের সর্বশেষ পরীক্ষায় প্রায় ৯০ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ হাজার ৮৭৮ জন প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন।
চাঁদপুর জেলা বার থেকে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনের আজ ১৩৭তম দিনের মাথায় এই মহাসমাবেশে আমি বলতে চাই একটাই কথা; আমাদের জীবনের পাঁচটি বছর ফিরিয়ে দিন।’
ময়মনসিংহ থেকে আসা রাজিব বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাবা তার পুরো জীবন শেষ করে দিয়েছে আমাকে উকিল বানানোর উদ্দেশ্যে। কর্মস্থলে যেতে এতই সময় চলে গেছে যে, গত চার মাস আগে আমার বাবা মারা গেছে। আমার উকিল হওয়া দেখে যাইতে পারল না৷ এর দায় কে নেবে?’
মহাসমাবেশ থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাসভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেন বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদের সদস্যরা৷
মহাসমাবেশের আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী স্মরণ বলেন, ‘আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে বাস-ট্রাকের ব্যবস্থা করব৷ আমরা আইনমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও দিব, যতক্ষণ না আমাদের দাবি তারা মানছেন।
‘আইনমন্ত্রী বলেন বার কাউন্সিল যান, বার কাউন্সিল বলেন অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে যান৷ এই যে সময়ের ঘূর্ণিপাকে পড়েছি, এই ঘূর্ণিপাক থেকে বের হতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সাথে যারা প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন করোনা হয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
‘মরার আগে অ্যাডভোকেট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। আজ আমাদের দাবি না মানলে আমরাও স্বপ্ন পূরণের আগেই হয়তো না ফেরার দেশে চলে যাব।’