মাস্ক না পরলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতির পরেও দেশবাসীর মধ্যে এ নিয়ে অনিহা স্পষ্ট।
সম্প্রতি খুলনায় মাস্ক না পরায় বেশ কয়েকজনকে জরিমানা ও আটক করে পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঢাকাতেও এই ধরনের অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে দুই-তিন দিনের মধ্যে ঢাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।’
সম্প্রতি সরকার মাস্ক ছাড়া কোনো সেবা মিলবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে এর পরেও পার্থক্য হয়নি তেমন একটা।
এই অবস্থায় সরকারের নির্দেশে প্রশাসন মাঠে নেমেছে। গত ৯ অক্টোবর খুলনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে আটক করা হয় ৩৩ জনকে। পরে জরিমানা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
১০ নভেম্বর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কয়েক হাজার দোকানে স্টিকার সাঁটিয়ে বলা হয়, মাস্ক না পরলে হবে জেল পরিমানা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করলে সুফল মিলবে বলে ধারণা করা হয়।
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে গত ২১ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল শিক্ষা বিভাগ। আদেশ অমান্য করায় তখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বিপুল সংখ্যক মানুষকে জরিমানাও করে।
সংক্রমণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী মাস্ক না পরে বা অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাইরে চলাচল করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।
অবশ্য গত ১৩ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ঘোষণায় এই আইন সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে বলা জেলা প্রশাসক ও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলা হয়।
করোনা মহামারীর মধ্যেও সরকার সাধারণ ছুটি বাতিল করে অর্থনীতি সচল করার চেষ্টা করছে। মানুষ বাইরে আসলেও ধারাবাহিকভাবে কমে এসেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দুই মাস আগে যত মানুষের পরীক্ষা করা হতো তার মধ্যে ২২ থেকে ২৩ শতাংশ শনাক্ত হলেও এখন তা ১০ শতাংশে নেমে এসেছে।
তবে শীতে আবার করোনা সংক্রম হতে পারে বলে সতর্ক করছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোভিড নিয়ে আরও সতর্ক থাকার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীতে মাস্ক পরা নিয়ে নতুন করে অভিযান শুরু হচ্ছে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
সচিব জানান, ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের জন্য সঞ্চয় স্কিম করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর্থিক ব্যবস্থাকে পুরো ডিজিটালাজেশন কার্যক্রম আরো এগিয়ে নিতে ‘জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এছাড়া তুরস্কে রপ্তানি বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ-তুরস্ক মিউচুয়াল এসিসটেন্ট ইন কাস্টমস ম্যাটার চুক্তি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন।
জাতীয় পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয়তা বিষয়ক জরুরি অবস্থায় প্রস্তুতি ও সাড়া দান পরিকল্পনা’ খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে।