স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীনের করোনা পরীক্ষায় দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে দুই ধরনের ফলাফল এসেছে।
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের পরীক্ষায় দুই জনের করোনা পজেটিভ এলেও পুলিশ হাসপাতালের পরীক্ষায় এসেছে নেগেটিভ।
এই পরিস্থিতিতে কোন প্রতিষ্ঠানের ফলাফল সঠিক ধরে নিয়ে এই দুই জন কাজ করবেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মুজিব বর্ষ উদযাপনে বসা সংসদের বিশেষ অধিবেশনের আগে সব সদস্যদের করোনা পরীক্ষা করা হয়। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছিল।
তবে রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কোস্টগার্ডের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল মন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিনের।
সরকার প্রধানের অনুষ্ঠানে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে কোভিড পরীক্ষা করাতে হয়। সেজন্য শনিবার তারা জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর-এ নমুনা দেন। রাতে রিপোর্ট আসে। তখন জানা যায়, তারা দুই জনই করোনা পজিটিভ। তাই তারা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।
তবে এই দুই জনের কারও শরীরে করোনা সংক্রমণের কোনো লক্ষণ নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু।
এই অবস্থায় রোববার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আবার করানো পরীক্ষা করা হয়। সন্ধ্যায় সেখান থেকে ফল আসে নেগেটিভ।
এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিব দুই জনই নিজ বাসভবনে কোয়ারেন্টিনে আছেন।
এখন কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল- এমন প্রশ্ন ছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার কাছে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে এখনও কিছু বলতে পারব না। কারণ, করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। কখন, কীভাবে, কারা নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং পরীক্ষা কে করেছে, সেখানে কোথাও ভুল হয়েছে কি না তা আমরা খতিয়ে দেখব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে জনসমাগমে গিয়েছেন। গত ১২ নভেম্বর চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। তার হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে দস্যু জীবন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন ৩৪ জন।
শনিবার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন মন্ত্রী।
এর আগেও দেশে এই ধরনের পরিস্থিতি দেখা গেছে। গত মে মাসে যশোরের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে ৯ স্বাস্থ্য কর্মীর করোনা শনাক্ত হওয়ার পর আইইডিসিআরের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসে।
আবার জুলাইয়ে বাংলাদেশ থেকে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে চার বাংলাদেশি জাপানে যাওয়ার পর করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ ধরা পড়ে। তখন বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে ফ্লাইট যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
এতদিন অন্য হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানের ফলাফল নিয়ে সন্দেহ হলে পুনঃপরীক্ষা করা হতো আইইডিসিআরে। এবার প্রথমবারের মতো আইইডিসিআরের পরীক্ষার ফলাফল যাচাই করা হলো অন্য হাসপাতালে।