বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নলিয়া শ্যামামোহন ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে।
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই তিনশ থেকে আড়াই হাজার পর্যন্ত বিভিন্ন অংকের টাকা নিয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সামসুন্নাহার চৌধুরী জানান, আর কোনো বাড়তি ফি নিতে দেওয়া হবে না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি অ্যাসাইনমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হলে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের মুঠোফোনে কল করে নির্ধারিত ফি দিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।
তবে গত ৪ নভেম্বর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার ফি আদায় না করতে নির্দেশনা দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন্নাহার চৌধুরী।
কিন্তু এই নির্দেশনায় মানা হচ্ছে না। টাকা আদায় করেই চলছে নলিয়া শ্যামামোহন ইনস্টিটিউট।
প্রতিষ্ঠানটির ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী শ্রাবণী রায় এক হাজার পাঁচশ টাকা, সামান্তা খান এক হাজার টাকা, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র দীপ্ত আড়াই হাজার টাকা, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তানভীর এক হাজার টাকা, নবম শ্রেণির ছাত্র রিফাত এক হাজার টাকা দিয়েছে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষকে। এমন আরও অনেকের কাছ থেকেই নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত ফি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, শিক্ষকরা নানা অজুহাতে তাদের কাছ থেকে ফি নিয়েছেন। ছেলেমেয়েদের কথা ভেবে তারা কোনো অভিযোগ করেননি, করেননি প্রতিবাদও। তারা এখন এই টাকা ফেরত চাচ্ছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার বলেন, ‘শিক্ষকরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে টাকা নিয়ে অন্যায় করেছেন। কাজটি ঠিক হয়নি।’
রাজবাড়ী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সামসুন্নাহার চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে।প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকতে তিনি বলেছেন, আর একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকেও কোনো ফি নেয়া যাবে না।’
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা বলেন, ‘কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই যেন এ নিয়ে ফি না নেয় সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এলে সেটি ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
এ ঘটনায় কথা বলার জন্য নলিয়া শ্যামামোহন ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক শাজাহান মিয়ার মুঠোফনে বেশ কয়েকবার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।