লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় মসজিদের মোয়াজ্জিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে লালমনিরহাটের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলি আদালত-৩ এর বিচারক ফেরদৌসী বেগম এই আদেশ দেন।
পুলিশি হেফাজতে যাওয়া আফিজ উদ্দীন বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন। সেখানেই তর্কাতর্কির জেরে শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়া হয়।
মসজিদে হাঙ্গামার পর প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা জুয়েল ও তার বন্ধুকে যখন বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যায়, তখন পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত হয়ে আসে। সে সময় মোয়াজ্জিন ও খাদেমকে সেখানে যাওয়ার জন্য বলা হলেও তারা যাননি। এই দুই জনই এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মো. মাহমুদুন্নবী। তিনি বলেন, আসরের নামাজের পর শহীদুন্নবী জুয়েলকে প্রথমে মসজিদের ভেতরে মারধর করা হয়। মসজিদের বাইরে এনে পরে আবার মারধর করা হয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে সন্ধ্যায় উত্তেজিত জনতাকে সঙ্গে নিয়ে শহীদুন্নবী জুয়েলকে হত্যা ও পরে তাকে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী সামছুল ইসলাম আদালতে বলেন, ‘মামলার এজাহারে আমার মক্কেলের নাম নেই। তাকে শুধুমাত্র হয়রানি করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এই মামলায় রোববার ভোরে বুড়িমারীর গুরিয়াটারী গ্রাম থেকে মো. হেলাল উদ্দীন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
লালমনিরহাট ডিবির পরিদর্শক মাহমুন্নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন । তাকেও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার তার বিষয়ে শুনানি হবে।
এ নিয়ে শহীদুন্নবী হত্যা মামলায় ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
গত ২৯ অক্টোবর বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন শহীদুন্নবী জুয়েল। একজন বন্ধুও তার সঙ্গে ছিলেন।
তারা কোরআন অবমাননা করেছেন গুজব ছড়িয়ে দেয়ার পর সেখানে যায় স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। তাদের উপস্থিতিতে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহ টেনে নিয়ে আগুন দেয়া হয়।