বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভেঙেই যাচ্ছে হেফাজত

  •    
  • ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ১৪:২১

অবৈধ বলে নেতৃত্ব নির্বাচনের সম্মেলন বর্জন করল প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর অনুসারীরা। সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন তারা।

১০ বছরের আমির শাহ আহমেদ শফীর মৃত্যুর দুই মাসের মধ্যে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামে ভাঙন স্পষ্ট হলো।

নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ডাকা সম্মেলনকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে তা বর্জন করেছেন শফী সমর্থকরা।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় নতুন নেতা নির্বাচনে মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর আহ্বানে হয় সম্মেলন।

তবে শফীর ছেলে আনাস মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সলিমুল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব মাইনুদ্দিন রুহী, ঢাকার লালবাগ মাদ্রাসার মুফতি ফয়জুল্লাহসহ একাংশ এই সম্মেলন বর্জন করেছেন।

মাইনুদ্দিন রুহী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই সম্মেলন অবৈধ। শুরা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন এরা, কিন্তু শুরা কমিটিই তো নেই। এটা বানোয়াট। আমরা এই সম্মেলন বর্জন করলাম।’

হেফাজতের সম্মেলনের বিরোধিতা করে আগের দিন প্রয়াত আমির শাহ আহমেদ শফীর সমর্থকদের সংবাদ সম্মেলন

 

এখন কী করবেন, আলাদা কমিটি গঠন করবেন কি না, এমন প্রশ্নে রুহি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আগামীকাল (সোমবার) সংবাদ সম্মেলন করতে পারি। সেখানে আমাদের অবস্থান জানাব।’

যদিও যারা সম্মেলন আহ্বান করেছেন, তারা এই বিদ্রোহী অংশের অবস্থান নিয়ে কোনো কথা এখনও বলেননি।

নারী নীতির বিরোধিতা করতে গিয়ে ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি গঠন করা হয় হেফাজতে ইসলাম। তবে সংগঠনটি তুমুল আলোচিত হয়ে উঠে ২০১৩ সালে।

মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে মাঠে নামে তারা।

 

ওই বছরের ৫ মে ১৩ দফা দাবিতে রাজধানীর শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়ার ঘটনায় ব্যাপক হাঙ্গামা হয়। সেদিন রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নেতাকর্মীদের উচ্ছেদের পর হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার অভিযোগ করে সংগঠনটি। তবে পরে এই অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। এমনকি হেফাজতের পক্ষ থেকে নিহত হিসেবে যাদের নাম দেয়া হয়েছিল তারা পরে ফিরে এসেছেন।

অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও ওই ঘটনার পর থেকে হেফাজতের রাজনৈতিক গুরুত্বও তৈরি হয়।

পরে শাহ আহমদ শফী সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। আর কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান দেয়ার পর সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয় আহমদ শফীকে।

হেফাজতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সদর দফতর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর ব্যাপক হাঙ্গামা হয়   

 

এর আগ পর্যন্ত হেফাজতের কমিটিতে যারা ছিলেন তারা বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ফলে হেফাজত রাজনৈতিক সংগঠন না হলেও তার নেতারা যে বিভিন্ন দলের সঙ্গে জড়িত, তারা সংগঠনকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করতে পারতেন।

গত কয়েক বছরে কওমিপন্থী দলগুলোর মধ্যে নতুন বিভাজন তৈরি হয়েছে। একাংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। একাংশ আবার বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ।

আল্লামা শফী বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের বলয়ে থাকা নেতারাই হেফাজতের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় ছিলেন। তবে ১৬ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী মাদ্রাসায় যে হাঙ্গামা হয়, তার নেতৃত্বে বিএনপির সঙ্গে জড়িত নেতারা ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

সম্মেলনের আগে শফীপন্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘কাউন্সিলের মাধ্যমে হুজুরের হাতে গড়া অরাজনৈতিক কওমি সংগঠনকে পরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবির, বিএনপির হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহও একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, হেফাজতের একতরফা সম্মেলন মেনে নেয়া হবে না।

ইসলামী ঐক্যজোট বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয় ১৯৯৯ সালে। তবে মুফতি ফজলুল হক আমিনীর মৃত্যুর পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তারা জোট ছাড়ে। এরপর আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রকাশ্যে সম্পর্ক না গড়লেও এক ধরনের সমঝোতা গড়ে তোলে তারা।

গত চার বছরে সরকারের কোনো সমালোচনা এই দলের নেতারা করেননি।

এ বিভাগের আরো খবর