বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাসে আগুন দিল কারা

  •    
  • ১৩ নভেম্বর, ২০২০ ২৩:৩৮

পুলিশ বলছে, তদন্তে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ, ফাঁস হওয়া ফোনালাপসহ সব কিছু বিবেচনায় রাখা হবে।

ঢাকায় উপনির্বাচনে ভোটের দিন বৃহস্পতিবার রাজধানীতে নয়টি বাসে আগুনের ঘটনায় জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাম্প্রতিকালে কোনো নির্বাচন বা উপনির্বাচনে ঢাকায় কোনো প্রার্থীর কর্মীদের সহিংস হতে দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা এ ঘটনায় পরস্পরকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়ে চলেছেন।

উত্তরায় নির্বাচন কেন্দ্রে ককটেলসহ গ্রেফতার সোহেল মিয়া জানিয়েছে, সুমন নামে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত একজনের নির্দেশে ভোটকেন্দ্রে ককটেল নিক্ষেপ করেন তিনি।

এদিকে ঘটনার দিন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর সঙ্গে দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের একটি ফোনালাপের অডিও ফাঁস হয়েছে। এতে ফরিদাকে বলতে শোনা যায়, ‘যুবদলের ছেলেরা আগুন দিয়েছে।’

তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বাসে আগুন দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ভোট চলাকালে বাসে আগুন সরকারের কাজ বলে আবার অভিযোগ করেছেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘একটা পাতানো ও জালিয়াতি নির্বাচন হয়েছে। সেটা থেকে জনগণের দৃষ্টিকে দূরে রাখার জন্য এই বাস পোড়ানোর ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে।’

ভোটের দিন বাসে আগুন বিএনপির কাজ দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপির এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আওয়ামী লীগ তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।’

বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ভোট গ্রহণ চলাকালে বেলা ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত রাজধানীতে নয়টি বাস আগুনে পোড়ানো হয়। বাস ভাঙচুরের ঘটনায় একটি, বাস পোড়ানোর ঘটনায় দশটি, বিস্ফোরক আইনে দুটিসহ মোট ১৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় শুক্রবার বিভিন্ন মেয়াদে ২৮ জনকে গ্রেফতার করে রিমান্ড দিয়েছে আদালত।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়াদের রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও গণযোগাযোগ বিভাগের উপ কমিশনার ওয়ালিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আরও খোঁজ নেয়া হবে। আসামিদের মধ্যে কয়েকজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীও রয়েছে।’

আরও পড়ুন: ডিবি কর্মকর্তার ডাকে উৎসুক জনতাও ‘আগুনযোদ্ধা’

উত্তরা পুলিশ জানিয়েছে, তুরাগ থানা পুলিশ সোহেল মিয়া নামে ময়মনসিংহ গফরগাঁওয়ের একজনকে আটক করেছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, মামুন নামে বিএনপির একজনের সঙ্গে চুক্তি হয় গ্রেফতার সোহেল মিয়ার। চুক্তি অনুযায়ী, নির্বাচন চলাকালে সোহেলের সঙ্গে উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় দেখা করেন মামুন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী সোহেল ককটেল নিক্ষেপ করে। তবে পালানোর সময় তাকে আটক করে পুলিশ। 

শুক্রবার সোহেল মিয়াকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে আনার আবেদন করে তুরাগ থানা পুলিশ। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে প্রথম আগুনের ঘটনা ঘটে বিএনপির পল্টন অফিসের বিপরীত পাশে। আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা আয়কর বিভাগের একটি স্টাফ বাসে আগুন দেয়া হয়।

ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপির নেতাকর্মীরা নয়া পল্টনে মিছিল বের করে। মিছিলের কিছু সময় পর দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আগুনের ঘটনাটি ঘটে। 

আয়কর বিভাগের স্টাফ বাসে আগুন যুবদলের নেতাকর্মীরা দিয়েছে বলে সন্দেহ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর সঙ্গে দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। এতে যুবদল বাসে আগুন দিয়েছে বলে নিতাই রায়কে জানান ফরিদা ইয়াসমিন।

দুপুর ১টায় মতিঝিল মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে আগুন দেয়া হয় অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে। দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে রমনা হোটেলের সামনে চলন্ত বাসে আগুন দেয়া হয়। পুড়ে যায় ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাস।

দুপুর দেড়টায় শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে পোড়ানো হয় দেওয়ান পরিবহনের একটি বাস। দুপুর ২টা ১০ মিনিটে আগুন দেয়া হয় সচিবালয়ের উত্তর পাশে রজনীগন্ধা পরিবহনের বাসে। ২টা ২৫ মিনিটে বংশাল নয়াবাজার এলাকায় দিশারি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।

২টা ৪৫ মিনিটে বাসে আগুন দেয়া হয় পল্টনে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় জৈনপুরী পরিবহনের একটি বাস। বেলা ৩টায় মতিঝিল পূবালী পেট্রোল পাম্পের সামনে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন জ্বালানো হয়। সর্বশেষ বাসে আগুন দেয়া হয় ভাটারা এলাকায়। সেখানে কোকাকোলা মোড়ে ভিক্টর পরিবহনের একটি বাস জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

তদন্তে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ, ফাঁস হওয়া ফোনালাপসহ অন্যান্য সব কিছু বিবেচনায় রাখা হবে বলে জানিয়েছেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবু বকর সিদ্দিক। 

তিনি বলেন, আমরা আগুন লাগার ঘটনা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে, কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে ৯ বাসে আগুন

এ বিভাগের আরো খবর