রাফসানের বয়স পাঁচ বছর। এখনও ভর্তি হয় নি স্কুলে। তার মা জাহানারা আক্তার পড়ান স্থানীয় এক স্কুলে।
বুধবার সকালে শহরের মনোহরপুরের বাড়ি থেকে মায়ের সঙ্গে তার কর্মস্থলের দিকে রওনা হয় রাফসান। তাদের পৌঁছে দিতে চৌহারার গ্রামের বাড়ি থেকে কিছুদূর এগিয়ে আসেন বাবা জিল্লুর রহমান।
স্ত্রী-সন্তানের জন্য কুমিল্লার পুরান রোড এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন জিল্লুর। রাফসানদের অটোরিকশা সেখানে পৌঁছার পরপরই দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন জিল্লুর। শিশু রাফসানের সামনেই গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় তার বাবাকে।
এ ঘটনার পর থেকেই নির্বাক হয়ে গেছে রাফসান। ঘরের মধ্যে থাকছে জড়োসরো হয়ে। মিশছে না বড় দুই ভাইয়ের সঙ্গেও। খেলার সঙ্গীরা তাকে ডেকে ডেকে ফিরে যাচ্ছে। মাকে জড়িয়ে ধরে ছেলেটি কেবল বলছে, ‘বাবা কই বাবা কই।’
আরও পড়ুন: দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন যুবলীগকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জিল্লুরের মা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আমি ছেলেকে হারিয়েছি। আমার ছোট নাতি রাফসান বাড়িতে এলে সারা দিন হৈ-হুল্লুড় করে। ঘরবাড়ি মাতিয়ে রাখে। আজ আমার নাতি কারো সাথে কথা বলছে না। আল্লায় যেন আমার পুতের খুনিদের বিচার করে।’
রাফসানের মা জাহানারা আক্তার বলেন, ‘তিনি ও তার ছোট ছেলে রাফসান রাতে ঘুমাতে পারছেন না। রাফসান শুধু ভয় পাচ্ছে। যারা আমার সন্তানদের এতিম করেছে আমি তাদের বিচার চাই।’
জিল্লুরের বড় ছেলে রায়হান চৌধুরী বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’
কুমিল্লা নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী জিল্লুর রহমানকে হত্যা করা হয় দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে। এ নিয়ে নগরজুড়ে চলছে আলোচনা।