বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রেরও শেখার আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনে উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের আইইএস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিজের ভোট দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ভোট দেয়া শেষে সিইসির কাছে বিএনপির বক্তব্যের (আমেরিকার নির্বাচন কমিশনের মতো বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন কেন নির্বাচন করতে পারে না?) বিষয়ে জানতে চান এক সাংবাদিক।
জবাবে সিইসি বলেন, ‘১৫০ বছর আগে থেকে আমেরিকায় নির্বাচনের কালচার (সংস্কৃতি) ছিল। আমেরিকা-ইউরোপ থেকে আমাদের শিখার আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমারও একটা কথা। আমাদের কাছ থেকেও আমেরিকার অনেক কিছু শেখার আছে।
‘কারণ চার-পাঁচ দিনেও উনারা ভোট গণনা করতে পারেন না। আর আমরা ইভিএমের মাধ্যমে চার-পাঁচ মিনিট থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে ভোট গণনা করি। এই জিনিসটা আমেরিকায় নেই।’
সিইসি বলেন, ‘আমেরিকায় কোনো কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন নেই। এটা প্রাদেশিক লেভেলে ওখানে আছে।’
অতীতে ব্যালটে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চেয়ে ইভিএমে ভোটার সংখ্যা কম হচ্ছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘ইভিএমের সঙ্গে মানুষ এখনো পরিচিত হতে পারেনি। এটা অনেক ক্ষেত্রে সত্য হলেও সব ক্ষেত্রে সঠিক না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ইভিএমে ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি ছিল।
‘যেহেতু এটা একটা উপনির্বাচন, এখানে সরকার পরিবর্তনের কোনো শঙ্কা থাকে না। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার এসব কারণ হতে পারে।’
‘কোথাও ভোটে সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে উপনির্বাচনে ভোট হচ্ছে।’
বিএনপি প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, ‘এটা সঠিক না। সকাল সাড়ে নয়টায় বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসার কথা ছিল। এ কারণে আমি অফিসে গিয়েছিলাম। কিন্তু অফিসে গিয়ে দেখি অভিযোগ নিয়ে তারা তখন পর্যন্ত যায়নি।
‘বিএনপির প্রার্থী বলেছেন, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রের বিষয়ে তার অভিযোগ রয়েছে। আমি সেখানে খোঁজ নিয়েছি; জেনেছি সে অভিযোগ ভিত্তিহীন। সেখানে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে বিএনপির নির্বাচনি এজেন্ট যায়নি। আমার মনে হয় না তারা যে অভিযোগ করেছেন, তাতে কোনো সত্যতা রয়েছে।’
নুরুল হুদা বলেন, ‘সাধারণ ছুটি না দেয়ার কারণ হলো যাতে কেন্দ্রে ভোটার থাকে। অনেক সময় আমরা সাধারণ ছুটি দিয়ে দেখেছি যে, যদি বন্ধ থাকে তবে ভোটাররা বাড়িতে চলে যায়। এ কারণে ভোটার কম হয়। এটা বিবেচনায় রেখেই বন্ধ রাখা হয়নি।’
সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৮ আসনে সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ হাবিব হাসান এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।