বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রথম আলো সম্পাদকের বিচার শুরু, আনিসুলকে অব্যাহতি

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২০ ১২:৫২

কাঠগড়ায় থাকা মতিউর রহমান ও অন্য আসামিদেরকে আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু জিজ্ঞেস করেন, ‘বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০৪ এর এ ধারা এবং ১০৯ ধারায় আপনাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে আপনাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বিধায় আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। আপনারা দোষী না নির্দোষ।’ তখন আসামিরা সমবেতভাবে বলেন, ‘আমরা নির্দোষ।’

ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে প্রথম আলোর সাময়িকী কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ নয় জনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।

তবে কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।

অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও শুভাশীষ প্রামাণিক, অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার কিছুক্ষণ আগে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ এ কে এম ইমরুল কায়েস আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে আদালতে মতিউর রহমান, আনিসুল হকসহ ১০ জন আদালতে হাজির হন। তারা সবাই দাঁড়িয়েছিলেন কাঠগড়ায়।

বিচারক আসামিদের কাছে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবুর মাধ্যমে জানতে চান তারা দোষ স্বীকার করবেন কি না।

তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০৪ এর এ ধারা এবং ১০৯ ধারায় আপনাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে আপনাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বিধায় আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। আপনারা দোষী না নির্দোষ।’

তখন আসামিরা সমবেতভাবে বলেন, ‘আমরা নির্দোষ।’

আদালত কিছুক্ষণ নীরব থাকেন, পরে মৌখিক আদেশ দেন। বিচারক বলেন, ‘আনিসুল হকের বিরুদ্ধে প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হলো। মতিউর রহমানসহ বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হলো।’

শুনানি শুরু হয় বেলা ১২টায়। আদেশ আসে ১২টা ২০ এর দিকে।

মামলায় আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি। তিনি বলেন, ‘এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলে তারা (আসামিরা) ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন। বিশেষ করে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ঘটনাস্থলে ছিলেন না।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন যে, ‘উপস্থিতি না থাকলেও উনি (মতিউর রহমান) তার দায় এড়াতে পারেন না।’

আদালত আদেশ দেয়ার পর আসামিরা গণমাধ্যমের কাছে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে আদালত এলাকা ত্যাগ করেন।

প্রথম আলোর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আনিসুল হককে অব্যাহতি দেয়ায় আমরা আংশিক ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে যাদের বিরুদ্ধে গঠিত হয়েছে তারা ন্যায়বিচার হতে বঞ্চিত হয়েছেন।’

যে ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তাতে অভিযোগ প্রমাণ হলে আসামিদের সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ড হতে পারে।

২০১৯ সালের ১ নভেম্বর প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলোর বর্ষপূতির অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় রেসিডেন্সিয়ালের নবম শ্রেণির ছাত্র আবরার।

আবরার ওই স্কুল শাখার নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ওই ঘটনায় আয়োজকদের বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ওঠে।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে আহত আবরারকে ঘটনাস্থলের কাছে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আবরারের মৃত্যুর ঘটনা চেপে গিয়ে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে আয়োজক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

পরদিন আবরারের বাবা মজিবুর রহমান মোহম্মদপুর থানায় অপমৃত্যুর এবং ৬ নভেম্বর অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আমিনুল হকের আদালতে আরও একটি মামলা করেন।

১০ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আলীম আদালতে প্রতিবেদন দেন। ১৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। পরে আসামিরা বিভিন্ন সময়ে জামিন নেন।

গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ঢাকার মুখ্যমহানগর হাকিম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ সে সময় সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক আবদুল আলিম বৃহস্পতিবার সকালে ওই প্রতিবেদন জমা দেন৷ সেখানে বলা হয়, আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল৷।’

সেসময় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষ একটি ব্যাখ্যা দেয়। এতে বলা হয়, অনুষ্ঠানের অংশীদার ছিল ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল৷ সেখানে তাদের একটি মেডিকেল ক্যাম্প ছিল৷ ওই ক্যাম্পের চিকিৎসকের পরামর্শেই রাহাতকে ইউনিভার্সেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল৷

এ বিভাগের আরো খবর