সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম হত্যা মামলায় গ্রেফতার মাইন্ড এইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়াজ মোর্শেদকে আদালতে হাজির করা হয়নি। কারণ হিসেবে তার অসুস্থতার কথা বলা হয়েছে।
বুধবার মহানগর হাকিম আবু সফিয়ান মো. নোমানের আদালতকে বিষয়টি জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক ফারুক মোল্লা।
তিনি নিয়াজ মোর্শেদকে আদালতে হাজির করতে হাজতি পরোয়ানা ইস্যুর আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, নিয়াজ মোর্শেদ গত ৪ অক্টোবর থেকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের চিকিৎসক পরিতোষ এর অধীনে নিউরোলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি কোমর থেকে পা পর্যন্ত অবশজনিত রোগে আক্রান্ত।
চিকিৎসা শেষে সুস্থতা সাপেক্ষে আদালতে সোপর্দ করলে নিয়াজ মোর্শেদের বিরুদ্ধে হাজতি পরোয়ানা ইস্যু করা হবে বলে বিচারক আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে এএসপিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
মামলায় মঙ্গলবার ১০ আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। এরা হলেন- হাসপাতালের বিপণন ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ জয়, সমন্বয়ক রেদোয়ান সাব্বির, শেফ মাসুদ মিয়া, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান।
আসামিদের মধ্যে আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদ আমিন ও ফাতেমা খাতুন ময়না পলাতক।
পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার ৯ নভেম্বর বেলা পৌনে ১২টার দিকে তাকে মাইন্ড এইডে নেয়া হয়। পরে মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, মারধরে মৃত্যু হয়েছে এএসপি আনিসুল।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা আনিসুলকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ৬ থেকে ৭ জন টেনে-হেঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন।
মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান।
এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সরশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারে দায়িত্বে ছিলেন।