বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নারীর গৃহস্থালি কাজের অর্থমূল্য কী

  •    
  • ১১ নভেম্বর, ২০২০ ২০:১৮

জিডিপিতে নারীর গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি না থাকার একটা বড় কারণ কীভাবে এই অবদান হিসাব করা হবে, তার কোনো গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি নেই। সর্বজনগ্রাহ্য একটি পদ্ধতি কী হতে পারে, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে নারীর গৃহস্থালি বা সেবামূলক কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা যারা করেন, তারা এই স্বীকৃতি দিতে চান।

কিন্তু এই অবদানের হিসাব কষার কোনো সর্বজনস্বীকৃত পদ্ধতি নেই। সেরকম একটি পদ্ধতি কীভাবে তৈরি করা যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম বলেছেন, সে রকম কোনো স্বীকৃত পদ্ধতি পেলে তা জিডিপির হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে। তার আগে এ হিসাব অন্তর্ভুক্তির স্বীকৃত পদ্ধতি বের করতে হবে।

মঙ্গলবার ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা: গৃহস্থালির সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা করেন। 

সভাপতির বক্তব্যে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ‘গৃহস্থালির কাজের স্বীকৃতি বলতে বোঝানো হচ্ছে নারী যে গৃহস্থালির কাজগুলো করছেন, নারীর অবস্থান তৈরি করা, সমাজে তার কাজের মূল্য পাওয়া।’

ওয়েবিনারে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘জাতিসংঘ প্রণীত পদ্ধতি ন্যাশনাল ইনকাম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমরা মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গণনা করে থাকি, যেটা সারাবিশ্বেই অনুসরণ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় বাজার বিনিময়ের মাধ্যমে হাত বদল হওয়া পণ্য ছাড়া অন্য কিছু জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ নেই। তবে এ কাজে আর্থিক মূল্যায়নের সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি।’

ড. শামসুল আলম বলেন, ‘পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে গৃহস্থালির কাজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সমাজের বিরাট একটি অংশ নিয়োজিত এ কাজে। প্রধানমন্ত্রীও একবার বলেছিলেন- এ কাজের মূল্যায়ন করা যায় না? বিষয়টি তিনি অবহিত। এটার মূল্যায়ন হওয়া উচিত। কিন্তু কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করব, এখানে এসেই আলোচনা শেষ হয়ে যায়।’

তিনি জানান, জিডিপিতে নারীর হিসাব অন্তর্ভুক্তির স্বীকৃত কোনো পদ্ধতি এখনও হাতে আসেনি। পথ-পন্থা পেলে এটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রয়ে গেছে।

দুই পদ্ধতিতে নারীর কাজের মূল্যায়ন করা যেতে পারে জানিয়ে ওয়েনিবারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ঘরের কাজে নারীরা যে সময় ব্যয় করে সেটা যদি বাইরের কাজে করে, সেটার মূল্য হবে বাইরে যে কাজ করা হয়, তার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি। নারী ঘরের কাজটি না করে অন্য কাউকে নিয়োগ দিলে তাকে অর্থ দিতে হয়, এটা হচ্ছে রিপ্লেসমেন্ট কস্ট। আর নারী এ কাজটির জন্য কত টাকা নেবে, সেটা হচ্ছে উইলিংনেস টু একসেপ্ট। যা পরোক্ষ।’

একশনএইড ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার অ্যাডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর মো. হেলাল উদ্দিন লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও দিনাজপুরের নারী-পুরুষের সময় ব্যয় নিয়ে সংস্থাটির এক সমীক্ষা তুলে ধরেন।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে নারীরা ৭ দশমিক ৭৮ ঘণ্টা গৃহস্থালির মজুরিবিহীন সেবামূলক কাজ করেছেন, সেখানে পুরুষেরা করেছেন ১ দশমিক ১ ঘণ্টা। ২০১৭ সালে নারী ও পুরুষের গৃহস্থালি কাজের এই ব্যবধান ছিল ৫ দশমিক ১৯ ঘণ্টা, যা ২০১৮ সালে ৩ দশমিক ৭৫ ঘণ্টা ও ২০১৯ সালে ৩ দশমিক ৪৩ ঘণ্টায় দাঁড়ায়।

মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দেখেছি, পুরুষদের কাজটিতে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে, তারা কাজটিকে মূল্যায়ন করেন এবং এতে সহযোগিতা করেন।’

ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, অভিনেত্রী ও শিক্ষক ত্রপা মজুমদার প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর