ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের দশ বছরে ধনী ও দরিদ্রের সুযোগের অসমতা দূর করা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বুধবার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনলাইন সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
পলক বলেন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের দশ বছর পর এসে গ্রাম ও শহরের মধ্যে দূরত্ব ঘোঁচানোর পাশাপাশি নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য দূর হয়েছে।
দেশে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর ৪ হাজার ৫০১ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়। সেসময় ভোলার প্রত্যন্ত চর কুকরিমুকরির ডিজিটাল সেন্টারের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে এর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পলক বলেন, যখন সিদ্ধান্ত হলো দেশের এক হাজার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা হবে, তখন প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল বিদ্যুৎ নিয়ে। কারণ, পরিষদগুলোতে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। সেই দায়িত্ব নিলো বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। তারা সেন্টারগেুলো সৌর বিদ্যুতের আওতায় আনে। স্থাপন শুরু করেন ডিজিটাল আইসিটি সেন্টার।
এই ধারণা এসেছে প্রধানমন্ত্রী ও তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাজ থেকে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সব অঞ্চলের মানুষ খুব সহজেই যেন সরকারি সব সেবা পায় সেটাই ছিল মূল লক্ষ্য। তা বাস্তবায়নেই ডিজিটাল সেন্টারের যাত্রা।
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে সেবা নিচ্ছেন মানুষজন।
বক্তব্যে পলক বলেন, ‘এক এক করে আমরা এগিয়েছি। সেই ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত দেশের তিন হাজার ৮০০ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবলে ইন্টারনেট পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে আইসিটি বিভাগের ইনফো সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৬০০ ও কানেক্টেড বাংলাদেশের মাধ্যমে আরও প্রায় ৬০০ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিকের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিতে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।’
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ১৫৫টি দুর্গম দ্বীপ ও পাহাড়ি অঞ্চলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ২১ সালে মধ্যে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার কাজও করা হচ্ছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট দিতে পারলে ডিজিটাল সেন্টারগুলোর ইকোনমিক হাব হিসেবে রূপান্তর করা যাবে।
অনুষ্ঠানে দেশের সব ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও এর সঙ্গে জড়িতদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অংশ নেয়ায় ধন্যবাদ জানান তিনি।
বুধবার দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সম্মেলনে একটি কিনোট উপস্থাপন করেন এস্পায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী।
তিনি জানান, দেশে প্রায় সাড়ে ৬ হাজারের অধিক ডিজিটাল সেবাকেন্দ্র থেকে মাসে গড়ে ৬০ লাখ নাগরিক সেবা নেন। আর সেন্টারগুলোতে ১৩ হাজার উদ্যোক্তা কাজ করছেন। এর মধ্যে ৫ হাজারের বেশিই নারী।
২০২১ সাল নাগাদ ৮ হাজার ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৫০০ সেবা মাসে ৭০ লাখ নাগরিকদের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে এটুআই।
একইসঙ্গে ২০৩০ সাল নাগাদ ২৫ হাজার ডিজিটাল সেন্টার চালু করে মাসে এক কোটি নাগরিককে ২ হাজার ৮০০ সেবা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে যুক্ত ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, এটুআইয়ের কর্মকর্তারা, বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী, এলজিআরডি মন্ত্রণালয় ও আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।