লক্ষ্মীপুর-২ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সহিদ ইসলাম পাপুলসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার অর্থপাচারের অভিযোগ এনে বুধবার পাপুল, তার স্ত্রী ও শ্যালিকার বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
এর আগে মঙ্গলবার দুদকের এক সভায় শ্যালিকা জেসমিন ইসলামের ব্যাংক হিসাবে ১৪৮ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন ও পাচারের তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে পাপুলের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
গতকাল দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, দুদকের অনুসন্ধানে পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন ইসলামের ব্যাংক হিসাবে ১৪৮ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন ও পাচারের তথ্য পেয়ে এই মামলা করা হচ্ছে। মামলায় পাপুল, তার স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম এবং মেয়ে ওয়াফা ইসলামকেও আসামি করা হচ্ছে।
জনশক্তি রফতানিকারক পাপুলকে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ আনা হয়েছে কুয়েতে।
পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে গত ২২ জুলাই সেলিনা ইসলাম ও জেসমিন ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
ওই দিন দুদক থেকে বেরিয়ে সেলিনা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমাদের কোনো গোপন সম্পদ নেই; অবৈধ সম্পদও নেই। যা আছে তার বিবরণ দুদককে দিয়েছি। আমরা আইনের পক্ষে। এই তদন্তে দুদককে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে ২২ জুন পাপুল, স্ত্রী সেলিনা, মেয়ে ওয়াফা ও শ্যালিকা জেসমিনের ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক।
গত ১৭ জুন পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। পাশাপাশি পাপুল দেশে ফিরলে আর যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেয় দুদক।
পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হন লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে।