এএসপি আনিসুল করিমকে ‘পিটিয়ে হত্যার’ ঘটনায় মাইন্ড এইড হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন প্রায় সব রোগী। শুধু এক জন অপেক্ষা করছেন স্বজনের।
সোমবার রাতেই হাসপাতালে থাকা ২০ জন রোগীকে নিয়ে গেছেন স্বজনরা।
হাসপাতালে থাকা একমাত্র রোগীর নাম আরিফুর হক চৌধুরী। তার বাড়ি কক্সবাজারে।
এর আগে সোমবার দুপুরের ঘটনায় হাসপাতালে কর্তব্যরত ছয় চিকিৎসক ও এক মানসিক রোগীসহ সাত জনকে রাতে আটক করে আদাবর থানা পুলিশ। এ ছাড়া বাকি কর্মচারীরা রাতেই সরে পড়েন।
মঙ্গলবার সকালে গিয়ে কর্মচারীদের কাউকেই হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে একজন অফিস স্টাফ ছিল। তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
হাসপাতালটিতে রোগীদের নির্যাতন করা হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কিছুই জানি না।’
এদিকে ‘পিটুনিতে’ আনিসুলের মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে পুলিশ বাদী হয়ে আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেছে।
- আরও পড়ুন: হাসপাতালে এএসপি ‘হত্যা’: আদাবরে মামলা
এর আগে সোমবার মাইন্ড এইড হাসপাতালে কর্মচারীদের পিটুনিতে আনিসুলের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।
- আরও পড়ুন: হাসপাতালে এএসপিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, মানসিক সমস্যার কারণে সোমবার হাসপাতালটিতে ভর্তি করার পরপরই কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
আনিসুলের ভাই রেজাউল করিম বলেন, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
তিনি বলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান। কাউন্টারে ভর্তি ফরম পূরণের সময় কয়েকজন কর্মচারী তার ভাইকে দোতলায় নিয়ে যান। কিছু সময় পরই জানানো হয়, আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এরপর তারা তাকে দ্রুত হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক জানান তিনি মৃত।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, বেলা ১২টার দিকে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী আনিসুলকে জোর করে একটি কক্ষে ঢোকাচ্ছেন। সেখানে ছয় জন তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেছেন। আরও দুই জন তার পা চেপে ধরেছেন এবং মাথার দিকে থাকা দুই জন কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছেন।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় একটি কাপড় দিয়ে আনিসুলের দুই হাত বাঁধা হয়। চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয়, তখন তার কোনো সাড়া-শব্দ ছিল না। একজন কর্মচারী তার মুখে পানি ছিটালেও সাড়া দিচ্ছিলেন না আনিসুল।