বরিশালের আগৈলঝাড়ায় অনুমোদনহীন একটি ক্লিনিকে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে গর্ভের সন্তানসহ সীমা বেগম নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ক্লিনিকের দুই আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। ক্লিনিকটিও সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
সীমা বেগম আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের ভ্যানচালক মন্টু বাহাদুরের স্ত্রী।
তার স্বজনেরা জানান, সোমবার সকালে প্রসবব্যথা শুরু হলে সীমা বেগমকে পশ্চিম বাগধা এলাকায় ‘রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন’ ক্লিনিকে নেয়া হয়।
সে সময় ওই ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক না থাকার পরেও রাশিদা বেগম ও মায়া বেগম নামে দুজন আয়া সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সীমা বেগমের সন্তান প্রসব করাতে যান।
এ সময় সীমার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে ওই দুই আয়া তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। পরে স্বামী মন্টু দ্রুত সীমাকে পয়সারহাট আদর্শ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পরামর্শ দেন। উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সীমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনদের অভিযোগ, প্রসব করাতে গিয়েই গর্ভের সন্তানসহ সীমার মৃত্যু হয়েছে। তবে বিষয়টি গোপন রেখে আয়ারা তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।খবর পেয়ে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রব হাওলাদার ও আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) গোলাম ছরোয়ার ওই ক্লিনিকে যান। এ সময় তারা দুই আয়া রাশিদা বেগম ও মায়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
পরে উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া হয়।
উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বখতিয়ার আল মামুন জানান, উপজেলায় যতগুলো বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে তার তালিকায় ‘রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন’ ক্লিনিকের নাম নেই। অনুমোদন ছাড়া কীভাবে তারা রোগী ভর্তি করেছে ও চিকিৎসা দিয়েছে তা নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।
ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, ঘটনার সাথে অভিযুক্ত দুই আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য সীমা বেগমের মরদেহ বরিশালের শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মামলা করেছেন বলেও জানান তিনি।