উচ্চ আদালতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে আটকে থাকা হাজী মো. সেলিমের দুর্নীতির মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধোরের মামলায় ছেলে ইরফান সেলিমকে গ্রেফতারের পর হাজী সেলিমের অতীতের নানা ঘটনা সামনে এসেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেয়া দণ্ডের বিষয়ে শুনানির করতে সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত মামলাটি দ্রুত শুনানির জন্য বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একে এম জহিরুল হকের আদালতে আবেদন জানিয়েছি। আশা করি দ্রুতই এ মামলার শুনানি শুরু হবে।’
জ্ঞাত আয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে লালবাগ থানায় ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালে বিচারিক আদালত তাকে ১৩ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে।
পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিম হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট ২০১১ সালে তাকে খালাস দেয়। এই খালাস আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক।
২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাসহ আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দেয়।
রায়ে হাজী সেলিমের আপিল আবেদনটি হাইকোর্টকে নতুন করে শুনানি নিয়ে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। এরপর এই মামলাটি আর শুনানি হয়নি।
গত ২৫ অক্টোবর নৌ বাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় পরদিন ইরফান সেলিমকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এরপর ইরফানের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের সম্পদের হিসাব চায় দুদক।
প্রকাশ পায় হাজী সেলিম ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে অগ্রণী ব্যাংকের, নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে সরকারের জমি দখল করে রেখেছেন। দুটি জমিই উদ্ধার করা হয়েছে।
সরকারি বধির স্কুলের জমিতে হাজী সেলিম সিএনজি স্টেশন গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ আছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলও তার দখলে আছে অভিযোগ তুলে সম্প্রতি তা উদ্ধারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়াও পুরান ঢাকায় বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবন সরকার দলের সংসদ সদস্য দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ আছে।
১৯৯৬ সালে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগে এসে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য হন হাজী সেলিম। ২০০১ সালে তিনি পরাজিত হন। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে ১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে নেমে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে দেন।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে হাজী সেলিমকে আবার মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।