ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করে রাষ্ট্রপতির জারি করা অধ্যাদেশ আইনে পরিণত বিল তোলা হয়েছে সংসদে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে রোববার এই বিলটি উত্থাপন করা হয়।
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশটি অনুমোদনের জন্য তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এরপর মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বিলটি উত্থাপন করেন। পরে তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের প্রতিক্রিয়ায় দেশজুড়ে আন্দোলনের মধ্যে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করে সরকার। গত ১২ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাজা বাড়ানোর বিলে সম্মতি দেয় মন্ত্রিসভা। সংসদ অধিবেশনে না থাকায় পরদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সে প্রস্তাবে সই করলে জারি হয় অধ্যাদেশ।
কোনও অধ্যাদেশ জারির পর সংসদের প্রথম বৈঠকে তা উপস্থাপনের বিধান রয়েছে।
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপধারায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন ও অর্থদণ্ডের কথা বলা আছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
সংশোধিত আইনের খসড়ায় ৯(১) উপধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দের জায়গায় ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
আইনের ৯(৪) (ক) উপধারায় কেউ নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা বা আহত করার চেষ্টা করলে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের কথা বলা আছে।
এই উপধারা সংশোধন করে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ এর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো যোগ করা হয়েছে।
- আরও পড়ুন: অবশেষে ধর্ষণের বিচারে গতি
বিলে অপরাধের শিকার ব্যক্তির পাশাপাশি ‘অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির’ মেডিক্যাল পরীক্ষা করার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ৩২ ধারার সঙ্গে ৩২(ক) শিরোনামে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে বিলে।
সেখানে ২০১৪ সালের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইনের বিধান অনুযায়ী ডিএনএ পরীক্ষা করার কথা জানানো হয়।
খসড়া আইনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নারী ও শিশু ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ সংঘটন, সামাজিক গতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব রাখাসহ সার্বিক সামাজিক উন্নয়নের ধারাকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এইরূপ হীন অপরাধ দমনে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণার্থে দণ্ডারোপের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা গ্রহণ-সময় ও পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় অত্যাবশ্যক।’