বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যে কবুতর হাসি ফোটায়

  •    
  • ৭ নভেম্বর, ২০২০ ০৯:২৯

হবিগঞ্জে অন্তত ২০ জন সফল কবুতর খামারি আছেন। তাদের দেখে এগিয়ে এসেছেন আরও অর্ধশতাধিক তরুণ।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের তারেক মিয়া। দীর্ঘদিন ছিলেন দুবাইয়ে। সে সময় তার মালিকের বেশ কিছু কবুতর দেখাশোনা করতেন। তখন কবুতরের প্রতি তার অন্যরকম এক টান জন্মায়। এই খুদে পাখিগুলোর প্রেমে পড়ে যান তিনি।

দেশে ফিরে ওই কবুতরগুলোর কথা তার বেশ মনে পড়ে। এ কারণে কয়েকটা কবুতর কিনে এনে পালন শুরু করেন। এখন তার খামারে ২০০টি কবুতর আছে। পাখিগুলো তার মুখে হাসি ফোটায়। এগুলো তার বাড়তি আয়ের উৎস। এখন তিনি একজন সফল কবুতর খামারি। 

তারেক দেশে ফিরে আসেন ২০১৪ সালে। শখের বশে শুরু করা কবুতরের ছবি ও ভিডিও ছাড়তে থাকেন ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে। এতে ব্যাপক সাড়া পান। দেশের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কবুতর কিনতে চলে আসেন তার কাছে। এখন প্রতি বছর এই খাত থেকে তিনি অন্তত ২ লাখ টাকা লাভ করেন।

শুধু তারেক মিয়া নন, এ জেলায় এমন অন্তত ২০ জন সফল কবুতর খামারি আছেন। তাদের দেখে এগিয়ে এসেছেন আরও অর্ধশতাধিক তরুণ।

খামারিরা গিরিবাজ, ফ্লাই, রেইসিং, প্যান্সিসহ নানা উন্নত জাতের কবুতর পালন করছেন। তাদের দাবি, উন্নত জাতের এক জোড়া কবুতর ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

তারেক মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, দুবাইয়ে থাকার সময় তিনি যে মালিকের অধীনে কাজ করতেন, তার ১০০টি কবুতর ছিল। তিনি সকাল-বিকেল ওই কবুতরগুলোর দেখভাল করতেন। কবুতরগুলোর প্রতি তার একটা অদ্ভূত মায়া জন্মায়। দেশের ফেরার পর সেই কবুতরগুলোর কথা খুব মনে পড়ত। মন খারাপ হতো। তাই একদিন তিনি কয়েকটি কবুতর আনেন।

তিনি বলেন, মাত্র দুই বছরে তার বেশ কয়েক জোড়া কবুতর হয়ে যায়। এখন তার খামারে প্রায় ২০০টি কবুতর আছে। প্রতি মাসে তিনি ৫০-৬০ জোড়া বাচ্চা পান। একেক জোড়া কবুতর ২ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামের কবুতর খামারি গোলাম রাব্বানি বলেন, স্কুলজীবন থেকেই তার কবুতর খুব ভালো লাগত। এরপর কলেজে যান, শুরু করেন কবুতর পালন। ধীরে ধীরে খামার করেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে মাংসের কবুতরের চেয়ে বিভিন্ন খেলার কবুতরের চাহিদা অনেক বেশি। দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ কবুতর কিনতে তার খামারে আসেন। শুধু তাই নয়, তাকে দেখে গ্রামের অনেক যুবক কবুতর পালনে এগিয়ে এসেছেন। নতুন হিসেবে তারাও অনেক সফলতা পেয়েছেন।

হবিগঞ্জের ব্যবসায়ী খায়রুল হাসান বলেন, নানা ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে তাকে প্রায় সবসময়ই ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপরও তিনি বাসার ছাদে ৩০০টি কবুতর পালন করেন। এ কাজ করেন শখের বশে। এটি একটি ভালো খাত। বেকার যুবকেরা চাকরির আশায় না ঘুরে কবুতর পালনে এগিয়ে এলে সফলতা পাবেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, এ জেলায় কবুতরের কতগুলো খামার আছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান তার কাছে নেই। তবে এখন অনেক যুবক নিজ উদ্যোগে কবুতর পালনে এগিয়ে আসছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে তাদের কবুতর পালনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নারী কবুতর সাধারণ এক থেকে দেড় মাস পর পর বাচ্চা দেয়। কবুতর পালনে শ্রম ও খরচ অত্যন্ত কম। পাশাপাশি কম জায়গায় অনেক কবুতর পালন করা যায়। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। তাই শুধু বেকারেরা নন, যে কেউ কবুতর পালন করতে পারেন। সংসারের আর দশটা কাজের পাশাপাশি বাড়তি আয় করতে পারেন।

এ বিভাগের আরো খবর