১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জ্বলা ১০ তলা পাশা টাওয়ার দেখতে শুক্রবার সকালে অনেকেই ভিড় করেছিলেন রাজধানীর ডেমরায়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পোড়া ভবনটির সিঁড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসে একটি বিড়াল। বিড়ালটির গায়ের রং সাদা হলেও পুড়ে কালচে হয়ে গিয়েছিল।
এই দৃশ্য দেখে উপস্থিতি লোকজন অবাক হয়ে যায়। তাদের মধ্যে কয়েকজন বিড়ালটি ধরতে এগিয়েও যান। এগিয়ে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও। এতে ভয় পায় বিড়ালটি, চেষ্টা করে পালাতে। কোনোমতে আশ্রয় নিতে যায় একটু দূরেই পড়ে থাকা আম গাছের শুকনা ডালের আড়ালে। সেখানে গিয়েই কাত হয়ে পড়ে যায় বিড়ালটি।
তখন সবাই বুঝতে পারে আগুনে পুড়ে বিড়ালটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
কেউ কেউ বলতে থাকেন- ‘রাখে আল্লাহ, মারে কে, তাড়াতাড়ি পানি আনো পানি আনো, দুধ আনো দুধ আনো, খাবার আনো খাবার আনো।’ তখন পাশের চা দোকানি দৌড়ে আসেন ড্রাই কেক নিয়ে। আরও অনেকে এগিয়ে আসেন নানা রকম বিস্কুট নিয়ে। কিন্তু অনেক চেষ্টায়ও বিড়ালটিকে সেসব খাবারের একটাও খাওয়ানো যায়নি।
ডেমরায় আগুন পোড়া ভবন থেকে বেরিয়ে আসা বিড়াল। ছবি: সাইফুল ইসলাম
এরই এক পর্যায়ে স্থানীয় এক ছেলেকে দিয়ে বিড়ালটিকে নিজের চায়ের দোকানে নিয়ে যান দোকানদার। সেখানে ড্রাই কেকের সঙ্গে কনডেন্সড মিল্ক মিশিয়ে খাওয়ান বিড়ালটিকে। এরপর সেটির শরীর পরিষ্কার করে চুলার পাশে রাখেন তিনি। এসময় বিড়ালটি দেখতে আরও অনেকে ভিড় করেন তার চা দোকানে।
চুলার পাশে ১০-১৫ মিনিট থাকার পর বিড়ালটি কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে হঠাৎ দৌড় দিয়ে চলে যায় দোকানের পেছন দিকে।
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার পর ডেমরার পাশা টাওয়ারে ওই আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৬টা ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে রাত ২টার দিকে। তবে আগুন নির্বাপন ক্লিয়ারেন্স আসে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার পর। আগুনে পুড়ে গেছে ১০তলা ভবনটির ভেতরে রাখা প্রায় সব পণ্য।
আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবন থেকে বেঁচে যাওয়া বিড়াল। ছবি- সাইফুল ইসলাম
ফায়ার সার্ভিস বলছে, বিকাল চারটার পর ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগে। তার কিছু সময় আগে ছুটি হয় কর্মীদের। আগুন লাগার পরে তা ছড়ায় ওপরে ও নিচের ফ্লোরগুলোতে। তৃতীয় থেকে দশম তলায় রাখা বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কিছু জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।