রাজধানীর ডেমরায় পাশা টাওয়ারে লাগা আগুন নয় ঘণ্টার চেষ্টায়ও নেভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
ডেমরার কোনাপাড়া বাদশা মিয়া রোডের ১০ তলা পাশা টাওয়ারের কয়েকটি ফ্লোরে রাত দেড়টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন জ্বলছিল। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাশা লাইটিং এর মালিক ডেমরার স্থানীয় জলিল পাশা টিপু ওই ভবনেরও মালিক। পল্টন ও নওয়াবপুর রোডে তার বৈদ্যুতিক পণ্যের শোরুম রয়েছে। তিনি চীন থেকে পণ্য আমদানি করে ওই ভবনের মজুদ করে রাখতেন। পুরো ভবনটিই আসলে বৈদ্যুতিক পণ্যের গুদাম।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। তবে আগুন আশপাশের কোনো ভবনে ছড়াতে পারেনি।
ভবনের দুই পাশে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে নিউজবাংলাকে জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে আগুন লাগে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, তারা বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আগুন লাগার খবর পান। এর পর বিভিন্ন স্টেশন থেকে ১৪টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের স্টেশন অফিসার শহীদুল ইসলাম সুমন জানান, প্রধান কার্যালয় ছাড়াও আদমজী, ডেমরা, পোস্তগোলা ও খিলগাঁও স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট আগুন নেভাতে যোগ দেয়।
ভবনটি বৈদ্যুতিক বাতি ও পাখা তৈরির পাশাপাশি গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত করতেন জলিল পাশা। আগুনের কুণ্ডলী দেখে আশেপাশের মানুষ সেখানে ভিড় করে। উৎসুক জনতার ভিড় ঠেকাতে অবস্থান নেন পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা।
ভবনের সামনের এক কনফেকশনারি দোকানের মালিক রেফায়েত উল্লাহ জানান, প্রথমে আগুন ছোট আকারে ছিল। কর্মচারীরা ভয়ে না পালিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে অল্পতেই আগুন নেভানো সম্ভব হতো।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভবনটির পেছনের অংশে ও আরও কয়েকটি ফ্লোরে আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
পাশা টাওয়ারে আগুন। ছবি: সাইফুল ইসলাম
ভবনের ভেতর কী পরিমাণ মালামাল আছে, প্রাথমিকভাবে সে তথ্য পাওয়া যায়নি। ভেতরে কেউ আটকে পড়ে আছে কি না, সে বিষয়েও কিছু জানা যায়নি।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ করছেন। ভবনের ঠিক সামনে বড় একটি মেশিন বসিয়ে পানি ছেটানো হচ্ছে। তবে ভবনের পেছন পর্যন্ত পানি ছেটানো সম্ভব হচ্ছিল না। এ কারণে ভবনের পেছনের অংশে দাউ দাউ করে আগুন জলছিল।
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মীরা।
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুরো ভবনের বিভিন্ন লাইটের (বৈদ্যুতিক বাতি) গুদাম ছিল বলে জানতে পেরেছি।’