ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর করা ধর্ষণ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার ফোরামের নেতা নাজমুল হাসান সোহাগকে তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
মহানগর হাকিম কনক কুমার বড়ুয়া বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। এ নিয়ে এই মামলায় ছয় আসামির মধ্যে তিন জন গ্রেফতার হলো। এর আগে দুই আসামি সাইফুল ইসলাম ও নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ।
এই মামলায় নুর নিজেও আসামি। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন বাদী।
সোহাগকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
গত ১১ অক্টোবর নুরের সংগঠনের দুই নেতা সাইফুল ইসলাম ও নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ
বিচারক রিমান্ডের আদেশ দেয়ার পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ পিছিয়েছেন।
বুধবার প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ ছিল। কিন্তু দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তা প্রতিবেদন দিতে না পারায় ঢাকা মহানগর হাকিম ইলিয়াস মিয়া ২৫ নভেম্বর নতুন তারিখ দিয়েছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে লালবাগ থানায় ছাত্র অধিকার পরিষদের বরখাস্ত আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং নাজমুল হাসান সোহাগ, নুরুল হক নুর, সাইফুল ইসলাম, নাজমুল হুদা ও আব্দুল্লা হিল বাকির বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগে লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
এতে অভিযোগ করা হয়, হাসান আল মামুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন। নুর এই ঘটনার মীমাংসা করার আশ্বাস দিয়ে পরে হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, কথা না শুনলে অনলাইনে পতিতা বলে অপপ্রচার চালাবেন।
দুই দিন পর ধর্ষণ, ধর্ষণে সহযোগিতা ও অনলাইনে অপপ্রচারের অভিযোগ এনে কোতয়ালি থানায় একই আসামিদের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেন বাদী। এতে অভিযোগ করা হয়, হাসান আল মামুনের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে নিয়ে গিয়ে বাদীকে ধর্ষণ করেছেন নাজমুল হাসান সোহাগ।
সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে শাহবাগ থানায় পরে আরও একটি মামলা করেন বাদী।
গত ১১ অক্টোবর পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে দুই দিনের রিমান্ডেও নেয় পুলিশ। এখন তারা কারাগারে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে মামলার বাদীকে ‘দুঃশ্চরিত্রা’ বলায় নুরের বিরুদ্ধে ১৪ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা করেন ওই শিক্ষার্থী।
নুরসহ সব আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় টানা অনশন করেছেন বাদী। নুরের দাবি, তিনি সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন বলে ষড়যন্ত্র করে এই মামলা করা হয়েছে।
তবে এই মামলা নিয়ে নুরের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদে ভাঙন ধরেছে। সংগঠনের একাংশ নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। এই কমিটির আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল জানিয়েছেন, ওই নারীর অভিযোগ নিয়ে পরিষদে আলোচনা হয়েছে। হাসান আল মামুনের সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তিনিই তাকে আদালতে যেতে বলেছিলেন।