ঢাকার ধামরাইয়ে এক গৃহবধূকে গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে ও পায়ে শেকল পরিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার সকালে উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূর অভিযোগ, তার দেবর রফিকুল ইসলাম ওলিদ, তার স্ত্রী রেনু বেগম ও কিশোরী মেয়ে এ নির্যাতন চালান।
ওই নারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্বামীর লগে আমার ঝগড়া অয়, মারামারিও অয়। রাইতেই রাগ কইরা আমি বাবার বাড়িতে চইলা আসি। পরদিন সকালে পোলারে আনতে শ্বশুর বাড়ি যাই। তহন দেবর ওলিদ, তার বউ রেনু ও তাদের মাইয়ার লগে ঝগড়া লাগে।
‘আমি অগো মাইয়ারে শামলাইতে কই। কিন্তু অরা দা-বঁটি নিয়া আমারে মারতে আহে। আমি জান বাঁচাইতে পালাইয়া দৌড়ায় বাড়ির বাইরে যাই। অরাও আমার পিছন পিছন দৌঁড়ায়া রাস্তায় গিয়া আমারে ধইরা ফেলে। ওই সময় আমার স্বামী বাড়িতে আছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘হ্যারপর অরা আমার প্যাটে দড়ি বাইন্ধা টানতে টানতে বাড়ির সামনে নিয়া যায়। মাটিতে ফালাইয়া আমারে অরা অনেক মারে। বুকে, পেটে, মাথায় লাত্থি মারতেই থাকে। চুলের মুঠি ধইরা সুপারি গাছের চারপাশে ঘুরায়। পরে সুপারি গাছের লগে আমার বুক, প্যাটে ও কোমড়ে দড়ি দিয়া বান্ধে।
‘পায়ে শেকল পরাইয়া তালা দেয় ওলিদ। ওলিদের বউ আমার হাতে ও ঘারে কামড়ায়। আমি চিল্লাইলেও কেউ বাঁচায় নাই। সবাই চাইয়া দেখতাছিল। এ্যামনে কইরা গাছের লগে ৩-৪ ঘণ্টা অরা আমারে বাইন্ধা রাখে।’
গৃহবধূর ভাগনে সোলায়মান ভূঁইয়া জানান, মঙ্গলবার তার খালা ও খালুর মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন মারধর করলে তার খালা হাতকড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় ধামরাই থানায় অভিযোগ করা হয়।
তিনি জানান, বুধবার সকালে ছেলেকে আনতে শ্বশুর বাড়ি যান তার খালা। ওই সময় খালার দেবর ওলিদ তাদের ফোন দেন। খালাকে তারা বেঁধে রেখেছেন বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘ফোন পেয়ে দ্রুত খালার শ্বশুর বাড়ি যাই। সেখানে গিয়ে বাড়ির সামনে খালাকে সুপারি গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় দেখি। তার পায়ে শেকল পরিয়ে তালা দেয়া ছিল। বেলা ১১টার দিকে খালাকে উদ্ধার করে আমরা বাড়িতে নিয়ে আসি।’
ওই নারীর বাবা জানান, মেয়ের সংসার বাঁচাতে ঘটনাটির সুষ্ঠু মীমাংসার চেষ্টা করছেন তিনি।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের কোনো অভিযোগ তারা পাননি।