লালমনিরহাটে মসজিদে তর্কাতর্কির জেরে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার মামলায় নতুন করে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়াল ২১ জনে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত নিউজবাংলাকে এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বুধবার গভীর রাতে বুড়িমারীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আমরা এদেরকে ধরেছি। বিকেলে লালমনিরহাট আদালতে তোলা হবে।’
তবে এদের কারও নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
গত ২৯ অক্টোবর শহীদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার ঘটনায় আগে গ্রেফতার পাঁচজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এই ঘটনায় মামলা হয়েছে তিনটি। তবে এতে সুনির্দিষ্ট কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় পাওয়া ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, সেদিন যারা সামনের সারিতে ছিলেন, তাদের অনেকেই এলাকায় অচেনা।
পুলিশ জানিয়েছে, সেদিন জুয়েল ও তার বন্ধুর সঙ্গে মসজিদে তর্কাতর্কির ঘটনাটি মোটামুটি মীমাংসা হয়ে গিয়েছিল। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে যখন দুই জনকে নেয়া হয়, এরপর দলে দলে লোক আসতে থাকে।
- আরও পড়ুন: বুড়িমারী বর্বরতা: রিমান্ড শুনানি পেছাল
নতুন আসা এই লোকজন সেদিন ‘আল কোরআনের আলো, ঘরে ঘরে জ্বাল’, ‘ইসলামের আলো, ঘরে ঘরে জ্বাল’ স্লোগান দিয়ে হামলা করে ইউনিয়ন পরিষদে।
পরিষদ কার্যালয়ে থাকা দুই জনের মধ্যে ওসি সুমন একজনকে নিয়ে বের হয়ে যেতে সক্ষম হলেও হামলাকারীরা শহীদুন্নবীকে পিটিয়ে হত্যা করে।
পরে মরদেহ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে কয়েকশ গজ দূরে নিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়া হয়।
সেদিন যে স্লোগান দেয়া হয়েছিল, সেটি ধর্মভিত্তিক একটি দল ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে। এ কারণে এই ঘটনায় রাজনৈতিক ইন্ধন থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পুলিশ আটক করেছে মসজিদের খাদেমকে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয় তিনি একজন ধার্মিক ব্যক্তি। পরিচিতজনরা বলেছেন, তিনি নিয়মিত নামাজ পড়তেন। হজে যাওয়ারও প্রস্তুতিও তিনি নিচ্ছিলেন।