দণ্ডবিধির যেসব ধারায় বিবাহিত নারীদের জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করে সেসব আইন বাতিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাক, নারীপক্ষ ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন গত ১ নভেম্বর এ রিট করে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ এ আদেশ দেয়।
আদালতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার সারা হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জেনিফা জব্বার ও শারমিন আক্তার।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
আইনজীবী জেড আই খান পান্না নিউজবাংলাকে বলেন, দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কিত ব্যতিক্রম দফা ও বিবাহিত নারী ও কিশোরীদের (১৩ বছরের উর্ধ্বে) স্বামী কর্তৃক ধর্ষণের বিচার প্রাপ্তির অধিকার ক্ষুন্ন করে। এসব ধারা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছিল। আদালত শুনানি নিয়ে এ বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন।’
আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশ প্রধানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনে সম্প্রতি গত ২৫ অক্টোবর টাঙ্গাইলের চৌদ্দ বছরের এক কিশোরী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরে যৌনাঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা যান।
বিদেশ ফেরত ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তির সঙ্গে গত ২০ সেপ্টেম্বর ওই কিশোরীর বিয়ে হয়েছিল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিয়ের প্রথম রাত থেকেই ওই কিশোরীর যৌনাঙ্গে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণ আইন সংস্কারের দাবিতে রেইপ ল’ রিফর্ম কোয়ালিশনের ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
জোরপূর্বক যৌনমিলনের ফলে অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে বিবাহিত কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সম্পর্কিত জাতীয় সমীক্ষায় (২০১৫) জানা গেছে ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ বিবাহিত নারী প্রতিনিয়ত তাদের স্বামীদের যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, যার মধ্যে জোরপূর্বক যৌনমিলন অন্তর্ভুক্ত।