বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাজী সেলিমকে হারালেন ‘পানিবন্দি’ বৃদ্ধ

  •    
  • ৩ নভেম্বর, ২০২০ ২২:২৯

সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, ‘হাজী সেলিম আমাগো পানি দিয়া বন্দি করা রাখছে। অসুস্থ স্বামীরে নিয়া এই পানির মধ্যে আছি। হাজী সেলিম আমাগো জায়গা নিতে চায়। সে অনেক কথা বলছে আমাগো। আমরা কী করমো?’ 

নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার পিলকুনি এলাকায় চার বছর ধরে এক পরিবারকে পানিবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে।

১৯৮৯ সালে পিলকুনি এলাকায় ১৫ শতাংশ জমি কিনেছিলেন ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন। তার অভিযোগ, এর মধ্যে সাড়ে ৫ শতাংশ জমি হাজী সেলিম তার নামে খতিয়ানভুক্ত করে নেন টাকার জোরে। পরে তার বিরুদ্ধে ফতুল্লা ভূমি অফিসে মামলা করেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে বৃদ্ধ সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে রায় দিয়েছে ভূমি অফিস। তবে পানিবন্দি দশা থেকে মুক্তি পাননি সাখাওয়াতের পরিবার।

ফতুল্লা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, ‘মিস কেস মামলাটি কয়েক বছর ধরে চলে। সাংসদ হাজী সেলিমকে অনেকবার সময় দেয়া হয়। আমরা মামলাটি পর্যালোচনাসহ নথি যাচাই-বাছাই করে সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে রায় দিয়েছি।’ 

তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ফতুল্লা ভূমি অফিসে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে বিবিধ মোকদ্দমা করেন সাখাওয়াত হোসেন। সেই মোকদ্দমায় হাজী সেলিমকে কয়েকবার হাজির হতে নোটিশ দেয়া হয়।

‌‘তবে তিনি হাজির হননি, লোক পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার ওই বিবিধ মোকাদ্দমা নিষ্পত্তির শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে হাজী সেলিমের লোকজন এসেছিলেন। তারা আবার সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও গ্রহণ করা হয়নি।’

 

সাখাওয়াত হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাজী সেলিম আমার ৩ থেকে ৪ বছর পর পাশের একটা জায়গা কিনছে। এরপর তার লোকজন দিয়া আমার বাড়ি ঘেরাও কইরা দখল করতে চাইছে। কিন্তু এলাকার মানুষের জন্য পারে নাই।

‘পরে সে আমার চারদিক বন্ধ কইরা দিছে। বালুর বাঁধ দিয়া আমাগো পানিবন্দি কইরা রাখছে। পরে হাজী সেলিম আমার সাড়ে ১৫ শতাংশ জায়গা থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ জায়গা মিউটেশন (খতিয়ানভুক্ত) করাই নিয়া গেছে জোর কইরা।’

 

পাগলা বাজার এলাকার এক সময়কার এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘হাজী সেলিম লোকজন দিয়া পয়সার জোরে এসব করছে। এরপর আমি ওর নামে ফতুল্লা ভূমি সহকারি কমিশনারের অফিসে মিস কেস (নামজারি আংশিক সংশোধন)করছি। সাড়ে চার বছর ধইরা এই কেস চলছে। হাজী সেলিম টাকা দিয়া সব কিনে নিতে চায়। তাই এত বছরে কোনো সমাধান পাই নাই।’

সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, ‘হাজী সেলিম আমাগো পানি দিয়া বন্দি করা রাখছে। অসুস্থ স্বামীরে নিয়া এই পানির মধ্যে আছি। হাজী সেলিম আমাগো জায়গা নিতে চায়। সে অনেক কথা বলছে আমাগো। আমরা কী করমো? তাই স্বামী-স্ত্রী পানির মাঝখানেই থাকি। ওর বিচার আল্লায় করবো।’ 

 

এ প্রসঙ্গে ফতুল্লা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুর রহমান বলেন, ‘তাদের পানিবন্দি করে রাখার বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেকে জানাব।’

জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, ‘ওই বৃদ্ধ সহযোগিতা চাইলে আমরা তাকে পানিবন্দি অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সহযোগিতা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর