কর্মস্থলে পোশাক বিতর্কে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রহিমকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্যসচিব আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কী করে একটি সোজা জিনিসকে বাঁকা করতে হয়, তার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ এটি (আবদুর রহিমের বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তি)। তিনি জনস্বাস্থ্যের পরিচালক। তার ভাবার কথা গণমানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে। কিন্তু পড়ে আছেন অন্য বিষয় নিয়ে।’
এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, ডা. তানভীর আহমেদ চৌধুরীকে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের নতুন পরিচালক করা হয়েছে। আদেশে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়াকেও ওএসডি করার কথা জানানো হয়।
এর আগে নিজ কার্যালয়ে ধর্মীয় অনুশাসন অনুযাীয় পোশাক পরার নির্দেশনা জারির ঘটনায় জনস্বাস্থ্যের পরিচালক আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
রেজিস্ট্রি ডাকে রোববার এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। এতে তিন দিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়।
নোটিশে বলা হয়, ২০১০ সালে হাই কোর্ট এক আদেশ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না।
গত ২৮ অক্টোবর আব্দুর রহিম তার কার্যালয়ের পুরুষ কর্মীদের গোড়ালির উপরে এবং নারী কর্মীদের গোড়ালির নিচে কাপড় ও হিজাব পরার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেন। পর দিন গণমাধ্যমে এটি ফাঁস হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়।
বাংলাদেশের সরকারি চাকরি আইনে পোশাকের কথা বলা নেই। তবে এক যুগ আগে উচ্চ আদালতের এক আদেশ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে কাউকে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য না করার আদেশ দেয়া হয়। এতে বলা হয়, মানুষ কী পোশাক পরবে, এটা তার নিজের সিদ্ধান্ত।
আব্দুর রহিম এই নির্দেশ জারি করার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তিন কার্যদিবসের মধ্যে তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দেয়।
- আরও পড়ুন: ‘পর্দার আদেশ কেন আদালত অবমাননা নয়?’
আব্দুর রহিম নিউজবাংলাকে বলেন, তিনি তার ‘ধর্মীয় অনুভূতি থেকে’ এই নোটিশ জারি করেন। তবে কাউকে তিনি বাধ্য করবেন না।
অবশ্য রাতে আরেক আদেশে নোটিশটি প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমাও চান আব্দুর রহিম।
নোটিশে তিনি বলেন, ‘উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত সংবাদটির জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং সকলের কাছে এই অনিচ্ছাকৃত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং সেই সঙ্গে গোটা জাতির কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং ভবিষ্যতে এই ভুল হবে না বলে অঙ্গীকার করছি।’