বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন বুয়েটের শেরে বাংলা হলের সহকারী প্রভোস্ট (সংস্থাপন) এবং আইএটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইফতেখার আহমেদ খান।
সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি সাক্ষ্য দেন। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।
বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) দিন ঠিক করেন। মামলার ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ১৯ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে।
এদিকে আসামি মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলামের পক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু আদালতের চলমান সাক্ষীদের জবানবন্দি ও জেরার অডিও-ভিডিও ধারণ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হলেও বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান তা পরবর্তী আদেশের জন্য রেখে দেন ।
আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু নিউজবাংলাকে বলেন, সাক্ষীর সাক্ষ্য অডিও-ভিডিও রেকর্ড (ধারণ) করার আবেদন করা হয়। এতে সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ পরিপূর্ণ হবে এবং কোনো ভুল হয়ে থাকলে সঠিক ভাবে সংশোধন করা যাবে ।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকাতে অডিও-ভিডিও রেকর্ড করা হয়। এই উদ্দেশ্যে আমাদের দেশে প্রথম আবেদন করা হয়েছে। কিন্ত আদেশ পরে হবে বলে আদালত জানিয়েছেন।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী পিটিয়ে হত্যা করেন। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
ওই ঘটনায় নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।
অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারবহির্ভূত ৬ জন রয়েছেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার তরুণদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৮ জন।
গ্রেফতার ২২ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।
মামলার ৩ আসামি এখনও পলাতক। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত আসামি।
১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।