ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে এবার কুমিল্লার মুরাদনগরে সাতটি ঘরে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার বিকালে উপজেলার কোরবানপুরে এই হামলা হয়। এরপর ওই এলাকা ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। স্থানীয় কাউকে সেখানে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
এরপর কুরবানপুর ও আন্দিকোট গ্রামে চার প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
- আরও পড়ুন: গুজব ছড়ালে তাৎক্ষণিক শাস্তি
মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘মহানবীকে (সা.) নিয়ে করা ব্যঙ্গচিত্রে সমর্থনের গুজব ছড়িয়ে কোরবানপুর গ্রামের একটি বাড়ির ছয়টি ও পাশের বাড়ির একটিসহ সাতটি ঘরে আগুন দেয়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। ভিডিও দেখে মামলায় আসামি করা হবে।
এর আগে ধর্মীয় অবমাননা মামলায় এক শিক্ষকসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রোববার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
কুমিল্লার মুরাদনগরে গুজব ছড়িয়ে বাড়িঘরে আগুন ধরানো হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: নিউজবাংলা
এরা হলেন মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কোরবানপুর ব্লু বার্ড কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক রায় মোহন দেবনাথের ছেলে শংকর দেবনাথ ও আন্দিকুট গ্রামের জীবন ভৌমিকের ছেলে অনিক ভৌমিককে।
স্থানীয় পর্যায়ে গুজব ছড়ায় যে তারা মহানবীকে নিয়ে অবমানকার পোস্টে লাইক দিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে কোরবানপুর গ্রামের বাসিন্দারা।
বিকালেই দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন উপজেলার কোরবানপুর গ্রামের ধনমিয়া।
সন্ধ্যায় অভিযুক্তদের আটক করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ।
পূর্ব ধৈইর পূর্ব ইউপির চেয়ারম্যান বনজ কুমার শিব বলেন, ‘আমি ও শংকরের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এখন এর বেশি মন্তব্য করতে পারছি না।’
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর লালমনিহাটের বুড়িমারীতে একটি মসজিদে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে একজনকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
যদিও পরে জানা যায়, যাকে হত্যা করা হয়েছে তিনি একজন ধার্মিক ব্যক্তি। আর ওই ঘটনায় অন্য কোনো ইন্ধন থাকতে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে এর আগেও নানা সময় হামলা হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এ কারণে গুজব ছড়ালে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাৎক্ষণিক শাস্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।