স্বাধীন দেশের প্রথম বিসিএসের (১৯৭৩ সাল) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ১২ মুক্তিযোদ্ধা উপ-সচিব ও ২৭ যুগ্ম সচিবকে তাদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট, যারা চারদলীয় জোট সরকার আমলে পদোন্নতি বঞ্চিত হন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশ প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে।
২০১৩ সালে পদোন্নতি বঞ্চিতদের করা তিনটি রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এক রায়ে এ নির্দেশ দেয়।
রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৯৮ সালে উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বা নিয়োগের নীতিমালা অনুসারে অবসরে যাওয়া ৩৯ মুক্তিযোদ্ধা তাদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি ও আনুষঙ্গিক সুবিধা ও পদমর্যাদা পাবেন।
আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০২ সালের বিধিমালা এই মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রেজা-ই-রাব্বী খন্দকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
আইনজীবী রেজা-ই-রাব্বী নিউজবাংলাকে বলেন, ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধা, যারা প্রথম বিসিএস ১৯৭৩ সালে নিয়োগ পেয়েছিলেন তাদের পদোন্নতির জন্য ১৯৯৮ সালে একটি নীতিমালা করে সরকার। এরপর ১৯৯৯ সালে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির একটি তালিকা করে সরকার, যাতে তাদের কেউ কেউ পদোন্নতিও পান। ওই নীতিমালার আলোকে তাদের কেউ কেউ যুগ্ম সচিব পর্যন্ত হয়েছেন। কিন্তু দেখা যায় ২০০২ সালে নতুন আর একটি বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়।
এর আলোকে ২০০১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ১২ জন উপ-সচিব ও ২৭ জন যুগ্ম সচিবকে পদোন্নতি বঞ্চিত করে চারদলীয় জোট সরকার।
পদোন্নতি বঞ্চিত যুগ্ম সচিব মো. আমিরুল ইসলাম, মো. সাইফুজ্জামান ও উপ-সচিব মো. খলিলুর রহমান ২০০২ সালের বিধিমালার চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।
ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই বছরের ১২ নভেম্বর রুল জারি করে। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার রায় দিল হাইকোর্ট। এর ফলে অবসরে যাওয়া ওই ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধা তাদের পদোন্নতির মর্যাদা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলেও জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী।