বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান পায়েল হত্যায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিন জন হলেন হানিফ পরিবহনের বাসচালক জামাল হোসেন, চালকের সহকারী ফয়সাল হোসেন ও সুপারভাইজার মো. জনি। তাদের মধ্যে জামাল ও ফয়সাল সহোদর। মামলায় জনি ও জামাল ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৪ অক্টোবর যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায়ের তারিখ ১ নভেম্বর ঠিক করেন বিচারক। রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবার। পায়েলের বাবা গোলাম মাওলা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবার এ রায়ে খুশি হয়েছি। সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতায় বিচার সুষ্ঠু হয়েছে। এ জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয় সেজন্য শিগগিরই রায় কার্যকর দেখতে চাই।’
২০১৮ সালের ২১ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে হানিফ পরিবহনের বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেন পায়েল। পরদিন ভোরে প্রস্রাব করতে তিনি গাড়ি থেকে নামেন। বাসে ওঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা লেগে পায়েল আহত হন।
‘দায় এড়াতে’ চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার মিলে পায়েলের মুখ থেঁতলে নদীতে ফেলে দেন। ২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জের ভাটেরচর সেতুর নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় হানিফ পরিবহনের ওই বাসের সুপারভাইজার, চালক ও তার সহকারীকে আসামি করে গজারিয়া থানায় মামলা করেন পায়েলের মামা গোলাম সরওয়ার্দী বিপ্লব।
পরে সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল, চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের মধ্যে জামাল হোসেন ও ফয়সাল হোসেন দুই ভাই। পায়েলকে খুন করার আদ্যপান্ত জানিয়ে এ দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
মামলার বাদী গোলাম সরওয়ার্দী জানান, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচার শুরু হলেও পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু আসামিদের আবেদনে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ পাঠানো হয়।
বাদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার খান খালিদ আদনান বলেন, ‘আসামিরা বিচার বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আদালত তাদের কোন সুযোগ দেয়নি।’