লালমানিরহাটের বুড়িমারীতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শহীদুন্নবী জুয়েলকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘একটি সভ্য সমাজে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে গণপিটুনি এবং আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে বর্বর হত্যাকাণ্ড মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন, যা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ঘটনার ‘আসল’ তথ্য উদঘাটনে কাজ করবে কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীরের নেতৃত্বে কমিটি। তারা রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবে।
শনিবার মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুড়িয়ে দেয়া মরদেহটি এতটাই বিকৃত হয়েছিল যে ময়নাতদন্ত করাও সম্ভব হয়নি
ঘটনাটি কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে জানিয়ে বলা হয়, ‘কমিশন মনে করে, ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর।’
কমিশন বলে, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ধর্মকে অবমাননা করার অধিকার যেমন কারো নেই; তেমনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কাউকে হত্যা করার অধিকারও কাউকে দেওয়া হয়নি।’
শহীদুন্নবী ‘ভারসাম্যহীন’ ছিলেন কি না এবং ‘প্রকৃতপক্ষে ধর্ম অবমাননা করেছিলেন কি না’ তা খতিয়ে দেখে আইনের আওতায় সমাধান করা সমীচীন ছিল বলেও মনে করে কমিশন।
শহীদুন্নবীকে হত্যার পর এই এলাকায় পুড়িয়ে দেয়া হয়। ছবি: শাহজাহান সাজু
গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে শহীদুন্নবী জুয়েল পিটিয়ে হত্যার পর পেট্রল দিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন শহীদুন্নবী। সেখানে র্যাক থেকে কোরআন শরিফ নামাতে গেলে নিচে পড়ে যায়। এ নিয়ে গুজব ছড়ানোর পর শহীদুন্নবী ও তার এক সঙ্গীকে পেটানো হয়।
পরে সেখান থেকে তাদেরকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় শহীদুন্নবীকে। এরপর মোটর সাইকেল সমেত আগুন দেয়া হয় তার গায়ে।
ঘটনার দুই তিন পর তিনটি মামলা হয়েছে। যদিও সন্দেহভাজনরা সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।