বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শহীদুন্নবী হত্যায় মামলার প্রস্তুতি, দেহ রংপুর মেডিক্যালে

  •    
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২০ ১৩:২৮

মসজিদে তর্কাতর্কির জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় রংপুরের শহীদুন্নবী জুয়েলকে (৫০)। পরে তার দেহে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়।শুক্রবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ শুরু করেছে সিআইডির দুটি দল।   

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী বাজারে পিটিয়ে হত্যা ও দেহ আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় তিনটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

ময়নাতদন্তের জন্য নিহত শহীদুন্নবী জুয়েলের (৫০) দেহ পাঠানো হয়েছে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। 

এলাকায় টহল দিচ্ছে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) টি এম মোমিনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

মসজিদে তর্কাতর্কির জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় রংপুরের শহীদুন্নবীকে। পরে তার দেহে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

শুক্রবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দুটি দল।

ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে সিআইডি

এ ঘটনায় শহীদুন্নবীর পরিবার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ ও পুলিশের পক্ষ থেকে পাটগ্রাম থানায় তিনটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে। 

শহীদুন্নবীর মরদেহ শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে পাটগ্রাম থানা থেকে পাঠানো হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। শহীদুন্নবীর মা, স্ত্রী ও শ্যালক মরদেহের সঙ্গে ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে তার মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালেই থাকবে। ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তারপর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।

পাটগ্রামের বুড়িমারী বাজারে তাকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, শুক্রবার তাদের কাউকে এলাকায় দেখা যায়নি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।  

শহীদুন্নবী জুয়েল রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ান ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শহীদুন্নবী এক বছর আগে চাকরি হারান।

মরদেহ গ্রহণ ও মামলা করতে শুক্রবার সকালে রংপুর থেকে পাটগ্রামে পৌঁছান শহীদুন্নবীর স্বজনেরা। নৃশংস এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তাদের।

লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, শহীদুন্নবী জুয়েল ও তার সঙ্গী সুলতান জোবায়ের আব্বাস (৫১) বৃহস্পতিবার বুড়িমারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় বাজার মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করতে যান। জোবায়েরের বাড়িও রংপুরে।

পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়ার স্থান

অতিরিক্ত পুলিশ বলেন, ‘শহীদুন্নবী মসজিদের সেলফ থেকে ধর্মীয় বই নিয়ে পড়তে যান। এ সময় তাক থেকে একটি কোরআন শরিফ নিচে পড়ে যায়। এতে কিছু মুসল্লির ধারণা হয়, ইচ্ছা করেই কোরআন শরিফ ফেলে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ধর্ম অবমাননার গুজব আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

‘গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে মানুষ মনে করেছে তারা কোরআন অবমাননা করেছে। কিন্তু এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। উত্তেজিত জনতা এক পর্যায়ে মারমুখী হয়ে ওঠে। ওখানে ইউএনও, পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু তারা তাকে (শহীদুন্নবী) রক্ষা করতে পারেনি।’

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও কয়েকজন মুসল্লি শহীদুন্নবী ও জোবায়েরকে উদ্ধার করে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে নিয়ে যান। এ সময় উত্তেজিত মুসল্লিরা বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেন। পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়।

এক পর্যায়ে মুসল্লিদের একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল এসে ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙে শহীদুন্নবীকে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের বাইরে এনে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়।

শহীদুন্নবীর সঙ্গে থাকা জোবায়েরকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।  

শহীদুন্নবী ও জোবায়ের কেন রংপুর থেকে লালমনিহাটে গিয়েছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কারণ সম্পর্কে এখনো জানতে পারিনি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে যেখান থেকেই আসুক তারা তো যে কোনো মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেই পারে।’

রংপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাজিব বসুনীয়া নিউজবাংলাকে জানান, শহীদুন্নবী জুয়েলের বাড়ি রংপুর শহরে। তিনি ক‍্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ানের কাজ করতেন। এক বছর আগে তার চাকরি চলে যায়। তখন থেকে কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শহীদুন্নবী বৃহস্পতিবার সকালে তার বন্ধুর সঙ্গে বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি।

এ বিভাগের আরো খবর